বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী স্বপনের বক্তব্য যুবদল নেতা তসলিমের প্রত্যাখ্যান

উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি এবং যুবদলকে জড়িয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সরদার খালেদ হোসেন স্বপনের দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন যুবদল নেতা অ্যাডভোকেট এইচএম তসলিম উদ্দিন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘নির্বাচনী মাঠে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতেই বিএনপি এবং যুবদল নেতাকর্মীদের নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খালেদ হোসেন স্বপন।
শনিবার বেলা ১১টায় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেছেন এইচএম তসলিম উদ্দিন।
এইচএম তসলিম উদ্দিন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির বরিশাল বিভাগের সহ-সভাপতি ও বরিশাল দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। সম্প্রতি বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাঁকে জড়িয়ে সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার খালেদ হোসেন স্বপন। সেই বক্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন এইচএম তসলিম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে যুবদল নেতা এইচএম তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘গত ২৯ মে বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও অবৈধ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী খালেদ হোসেন স্বপন একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে আমাকে জড়িয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক, ভিত্তিহীন এবং কল্পনা প্রসূত একটি সাক্ষাৎকার উপস্থাপন করেন।
যা মোটেও সত্য নয় এবং যার সঙ্গে আমি, বিএনপি, যুবদল এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এরই মধ্যে বাবুগঞ্জ উপজেলা যুবদল এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। ঘৃণাভরে তার এমন ভিত্তিহীন বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি বলেন, বিনা ভোটের এই আওয়ামী সরকার আমিসহ সারা বাংলাদেশের লক্ষাধিক নেতাকর্মী মিথ্যা ও গায়েবি মামলার শিকার হয়েছেন। অনেক নেতাকর্মী গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। এ প্রেক্ষাপটে দেশ নায়ক তারেক রহমানের সাংগঠনিক নির্দেশনা অনুযায়ী আমি এবং সারা বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা এ অবৈধ সরকারের অধীনে সব প্রকার নির্বাচন বর্জনসহ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।
তসলিম বলেন, বাবুগঞ্জ উপজেলা একটি বিএনপি অধ্যুষিত এলাকা। এখানকার জনগণ বিএনপিকে ভালোবাসে এবং তারা অতীতের ন্যায় এখনও দুর্বার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ।
বিগত ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যতগুলো মিথ্যা ও গায়েবি মামলা হয়েছে এবং নেতাকর্মীরা যে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সেগুলো বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খালেদ হোসেন স্বপনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও নির্দেশেই হয়েছিল।
বর্তমান অবৈধ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী তার বিগত দিনের অনেক অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার আশঙ্কা থেকে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত করার অপকৌশল হিসেবে একটি বিভ্রান্তিমূলক কল্পনা প্রসূত বানোয়াট ভিডিও বার্তা উপস্থাপন করেন। যে বক্তব্যে আমাকে বিতর্কিত করতে এবং আমার সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার প্রয়াসে ও বিএনপি সমর্থিত জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও ভোটমুখি করার অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং বরিশাল জেলা যুবদলের পক্ষ থেকে দলের একজন কর্মী হয়ে এ ভিডিও বার্তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) মাসুদ হাসান মামুন, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন পিপলু, বরিশাল দক্ষিণ জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন রেজা খানসহ যুবদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মে সাংবাদিকদের দেয়া বক্তব্যে বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী খালেদ হোসেন স্বপন প্রত্যাশার সুরে বলেন, বাংলাদেশের কোথাও বিএনপি অংশগ্রহণ না করলেও আমরা এরই মধ্যে জেনেছি জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক তসলিম ভাই ৫ থেকে ৭ শত লোককে ফোন দিয়েছেন এ নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য ও আনন্দময় করার জন্য।
এ কারণেই বাবুগঞ্জে উৎসব মুখর নির্বাচন হবে। ফোন দেওয়ার পাশাপাশি সে (যুবদল নেতা তসলিম উদ্দিন) নিজেও একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। এজন্যই বাবুগঞ্জের নির্বাচনটা ব্যতিক্রমধর্মী হবে। কারণ এ নির্বাচনে বিএনপিও ভোট দিতে যাবে সেই আশ্বাসই জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক তসলিম ভাই বলেছেন।
এইচকেআর