ঢাকা শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

Motobad news

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও পাকা হয়নি কাঁচা রাস্তা 

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও পাকা হয়নি কাঁচা রাস্তা 
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বচিলা  গ্রাম। পূর্বচিলা গ্রামের হাসানিয়া ইবতেদায়ী মাদ্রাসা হয়ে হানিফ ডাক্তার বাড়ি পর্যস্ত দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটির এখন বেহাল অবস্থা। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তটি পানিতে ডুবে যায়। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পূর্বচিলা গ্রামের আক্কাস খানের বাড়ির পূর্ব পাশের তিন রাস্তার মোড় থেকে শুরু হয়ে পূর্বচিলা হাসানিয়া ইবতেদায়ী মাদ্রাসা হয়ে হানিফ ডাক্তার বাড়ি পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এ রাস্তায় বড় বড় গর্তের  সৃষ্টি হয়েছে। আবার ওখান থেকে আলতাফ মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত  কাঁচা রাস্তা গিয়ে ফসলি জমির সঙ্গে মিশে গেছে। 

এ গ্রামে প্রায় ৪ হাজার মানুষের বসবাস গ্রীষ্মকাল ও বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টি হলেই এক হাঁটু কাদা জমে। তখন যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটে চলাচলও বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সমস্যায় পড়েন পথচারীরা। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি পাকা করার দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, পূর্বচিলা গ্রামের প্রায় ৫ হাজার লোকের চলাচল দীর্ঘ ৫৩ বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রতি বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলে স্কুল, মাদরাসা ও কলেজ শিক্ষার্থীদের প্রায় কাঁদা ডিঙিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়।  রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।

নির্বাচন এলে রাজনৈতিক নেতারা রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর পাকা করার উদ্যোগ নেয়া হয় না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানান, উপজেলার পূর্বচিলা গ্রামের সিকদার পাড়া, তালুকদার বাড়ী , হাওলাদার বাড়ী, হিন্দু পাড়া, সরদার বাড়ী, হানিফ ডাক্তার বাড়ী, প্যাদা কান্দা গ্রামের  লোকজন চলাচল করে। 

সড়কটি কাঁচা থাকার কারণে চলাচলে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জনগণের ব্যাপক চলাচলের কারণে প্রতি বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটিতে প্রায় হাটু পর্যন্ত কাঁদা হয়ে থাকে। এছাড়া ওই গ্রামের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ওই কাঁচা সড়ক দিয়ে কলেজ, বিদ্যালয় ও মাদরাসায় আসা-যাওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ওই রাস্তা দিয়েই নোমরহাট, অফিস বাজার, আমতলী উপজেলা সদরে  যেতে হয়, এতে করে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।

এলাকাবাসীরা আরো জানান, রাস্তাটি পাকাকরণ খুবই প্রয়োজন। তা না হলে ওই গ্রামের মানুষগুলো প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তা পাকা করনের দাবি জানান তারা। 

আলম নামে এক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা সকল জনপ্রতিনিধির কাছে গেছি। এলাকার মুরুব্বিসহ অসংখ্য মানুষ জনপ্রতিনিধিদের কাছে বার বার ধরণা দিয়ে শুধু প্রতিশ্রুতিই পেয়েছি। হলদিয়া  ইউনিয়নে এরকম রাস্তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

স্থানীয় সমাজ সেবক  পাশা মিয়া জানান, খুবই দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে কয়েকবার অবগত করা হলেও কোনো সাড়া পাইনি। গত ইউপি নির্বাচনের আগে পাকা করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন, তবে এখন পর্যন্ত রাস্তাটি হচ্ছে না। হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক বলেন, কাঁচা রাস্তাটি পাকা করনের জন্যচেষ্টা করতেছি। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য ঝন্টু তালুকদার  জানান, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণের জন্য সড়কটি পাকাকরণ করতে হবে। সড়কটি পাকা হলে মানুষেরা কৃষিপণ্য সহজে বাজারে বিক্রি করতে পারবে। 

সড়কে বড় বড় নালা রয়েছে। মানুষ গামছা পড়ে কোমড় সমান পানি ও কাদামাটির পেরিয়ে চলাচল করছে। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন মানুষ শহরে, বাজারে ও হাসপাতালে যাতায়াত করে।

আমতলী উপজেলা প্রকৌশলীর আব্দুল আল মামুন বলেন, বরগুনা জেলার অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য যে নতুন ডিপিপি তৈরি হতেছে, ঐ ডিপিপিতে এ রাস্তাটি অন্তর্ভুক্ত হবে। 

এদিকে সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশ্রাফুল আলম। একই রকমের আশ্বাস দিয়েছেন আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম সরোয়ার ফোরকান।  
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন