গ্রামের স্কুল শহরে স্থানান্তর, গ্রামবাসীর বিক্ষোভ
চরফ্যাশনের গ্রাম থেকে পৌর শহরে সরিয়ে নেওয়া স্কুল গ্রামে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য গ্রামবাসী বিক্ষোভ করেছে। মঙ্গলবার চল মাদ্রাসা ইউনিয়নের চর নিউটনসহ আশপাশের গ্রামের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা এ বিক্ষোভ করেছেন।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, উপজেলার পূর্বাঞ্চলের দুর্গম গ্রামসমূহের ছেলে-মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য ১৯৮৫ সনে মফিজাবাদ এফ এইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। মফিজাবাদ গ্রামে চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক মিয়ার দানকৃত আশি শতাংশ জমিতে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্থানীয়দের সহযোগিতা এবং অনুদানে ঘর খেলার মাঠ এবং ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে বিদ্যালয়টি চলছিল।
মফিজাবাদ গ্রামসহ নিকটবর্তী চর নিউটন, হামিদপুর, পূর্ব মাদ্রাজ, মোহাম্মদপুর-এই পাঁচটি গ্রামের ছেলে- ময়েদের কাছে বিদ্যালয়টি উন্নত শিক্ষার সিঁড়ি হয়ে বিদ্যমান ছিল। কিন্তু ২০০৮ সনে বিশেষ কারো ক্ষমতার প্রভাবে গ্রাম থেকে স্কুলটি পৌর শহরে সরিয়ে নেয়ার ফলে পাঁচ গ্রামের ছয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বের হওয়া ছেলে-মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষার বিকল্প কোন সুযোগ থাকলো না ।
মফিজাবাদ এফ এইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোলাইমান ভূঁইয়া জানান, ২০০৮ সনে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে নুরজাহান বেগমের দানকৃত আশি শতাংশ জমিতে স্থানান্তর করা হয় বিদ্যালয়টি।
স্থানান্তরের পর থেকে ধাপে ধাপে মফিদাবাদ গ্রামের পুরাতন স্কুলটি বিলুপ্ত করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ১৭ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বিপরীতে ৩৭৫ জন শিক্ষার্থী আছে।
মফিজাবাদ গ্রামে বিদ্যালয়ের পুরাতন টিনশেড ঘর, খেলার মাঠসহ সব অবকাঠামো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
মফিজাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহফুজুর রহমান বলেন, আমি নিজেও এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আশপাশের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর ৬/৭ শ ছেলে- মেয়ে বের হচ্ছে।
কিন্তু তাদের মাধ্যমিকে ভর্তির মতো স্কুল নেই।ফলে মেয়েরা বাল্যবিবাহ,অশিক্ষা এবং কুসংস্কারের অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হাফসা বলেছেন, স্কুলটি আগের জায়গায় ফিরিয়ে দিন। নাহলে আমাদের ছোটো ভাই- বোনরা কোথায় পড়বে।
বিদ্যালয়ের জমিদাতা আমিনুল ইসলাম বাচ্চু মালতিয়া বলেছেন, ৩৯ বছর ধরে চলমান স্কুলটি শহরে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে কেন? আমাদের স্কুল, আমাদের ফিরিয়ে দিন। শহরে স্কুল লাগলে, নিজেরা গড়ে নিন।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীপক হালদার বলেছেন, উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে বিষয়টি অবিহিত করে স্থানীয় জনগণের অনুভূতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে স্কুলের অবস্থান ঠিক করা হবে।
এইচকেআর