ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

Motobad news

লাখ লাখ জাল স্ট্যাম্পে আসল দলিল, চুক্তিনামা

লাখ লাখ জাল স্ট্যাম্পে আসল দলিল, চুক্তিনামা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকায় জাল স্ট্যাম্প তৈরির ছাপাখানার সন্ধান পেয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সেখানে অভিযান চালিয়ে ২০ কোটি টাকার জাল স্ট্যাম্পসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব জাল স্ট্যাম্পে কেউ হয়তো দলিল করছেন, কিন্তু স্ট্যাম্পটাই নকল।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন আবু ইউসুফ ওরফে পারভেজ ওরফে রানা, আতিয়ার রহমান সবুজ, নাসির উদ্দিন ও নুরুল ইসলাম ওরফে সোহেল। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ পরিচালিত এক অভিযানে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার (২৫ জুন) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

সংবাদ সম্মেলনে এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেফতার চক্রের মূলহোতা আবু ইউসুফ। চক্রটি ২০১৭ সাল থেকে কম্পিউটার ও প্রিন্টার ব্যবহার করে জাল স্ট্যাম্প তৈরি করে বিক্রি করতো। তবে ২০১৯ সাল থেকে গোপন ছাপাখানা বসিয়ে বৃহৎ পরিসরে জাল স্ট্যাম্প তৈরি শুরু করে। তিন ধাপে এসব জাল স্ট্যাম্প ক্রেতা পর্যায়ে পৌঁছে দিতেন তারা। তাদের কারখানা থেকে বরিশাল, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার নামে খাম উদ্ধার করা হয়েছে। তারা এসব জাল স্ট্যাম্প দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হতো। গ্রেফতাকারকালে ছাপাখানা থেকে ২০ কোটি ২ লাখ ২৪ হাজার টাকার মূল্যের ১৩ লাখ ৪০ হাজার জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের ১৯ হাজার ৪৮০টি জাল কোর্ট ফি এবং জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প বিক্রির নগদ ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকের ১ কোটি ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার ১৮টি চেকের পাতা, ১১৪ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার, ডাক বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিল ও বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়। ওই ছাপাখানা থেকে বিপুল পরিমাণ কাগজ জব্দ করা হয়, যা দিয়ে অন্তত আরো শত কোটি টাকার জাল স্ট্যাম্প বানানো সম্ভব ছিল।
রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৬৯

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন শিল্প-কারখানা, হাসপাতাল, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এমনকি আদালতেও এসব জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প সরবরাহ করা হতো। তবে প্রতিষ্ঠানের মূল কর্তাব্যক্তিরা হয়তো বিষয়টা জানেও না, যারা এগুলো কেনার দায়িত্বে থাকে পিয়ন বা ক্লার্ক তারাই কম দামে এগুলো কিনে থাকে। এটাও এক ধরনের অপরাধ। এসব জাল স্ট্যাম্পে কেউ হয়তো দলিল করছেন, কিন্তু স্ট্যাম্পটাই নকল। এসব ব্যবহারে দুর্নীতি বেড়ে যাচ্ছে, সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এজন্য সবাইকে রেজিস্টার্ড জায়গা থেকে স্ট্যাম্প কেনার পরামর্শ দেন তিনি। আসল স্ট্যাম্প ইউভি মেশিনে দিলে জলছাপ জ্বলজ্বল করে এবং কালো রেখাগুলো দৃশ্যমান। কিন্তু নকল স্ট্যাম্পে এগুলো দৃশ্যমান না।


এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হঠাৎ বড়লোক হওয়ার স্বপ্নে তারা এই ছাপাখানা স্থাপন করে জাল স্ট্যাম্পের ব্যবসা শুরু করে। তাদের প্রেস মেশিটনটি অনেক দামি, জার্মানির। কাগজ দিয়ে হুবহু নকল করে এসব বানানো হতো। এ চক্রে শুধু চারজনই নয় আরো কেউ জড়িত আছে। এটা অনেক বড় একটি চক্র। গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানা যাবে জানান তিনি।


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন