ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম
  • সরকার পরিচালনা করতে হলে নাগরিকদের কথা শুনতে হবে : তারেক রহমান কনস্টেবলের স্ত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বরখাস্ত এএসপি বরিশালসহ তিন বিভাগে ৬০ কিমি বেগে ঝড়, অতিবৃষ্টির শঙ্কা রাতের ভোটের আইডিয়া কার, ফাঁস করলেন সাবেক আইজিপি মামুন সাইবার হামলার আশঙ্কা, সতর্কতা জারি করলো বাংলাদেশ ব্যাংক লালমোহনে বৃত্তিপ্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান নতুন যুক্ত হচ্ছে ৪৫ লাখ ভোটার, বাদ পড়ছে ২১ লাখ বাকেরগঞ্জে মাদকাসক্ত ছেলেকে হত্যা, থানায় মা-বাবার আত্মসমর্পণ জুলাই সনদের খসড়া গ্রহণ করতে পারি না: এনসিপি বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুর প্রকোপ: বরগুনায় তিন মাস ধরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণহীন
  • সরকার পরিচালনা করতে হলে নাগরিকদের কথা শুনতে হবে : তারেক রহমান

    সরকার পরিচালনা করতে হলে নাগরিকদের কথা শুনতে হবে : তারেক রহমান
    ছবি: সংগৃহীত 
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের জনগণ কয়েকজন মানুষের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য গত দেড় দশক ধরে আন্দোলন অব্যাহত রাখেনি। কিংবা জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হয়নি। জনগণ রাষ্ট্র এবং সরকারে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্যই স্বৈরাচারকে হটিয়েছে, জীবন উৎসর্গ করেছে। সুতরাং সরকারে যখন যারাই থাকুক, সরকার পরিচালনা করতে চাইলে অবশ্যই নাগরিকদের কথা শুনতে  হবে। 


    বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে সাভারের আশুলিয়ার দারুল ইহসান মাদরাসা মাঠে এক সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

    জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন উপলক্ষ্যে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্র-শ্রমিক-জনতার পরিবারের সম্মানে ‘নারকীয় জুলাই’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে বিএনপি।  


    তারেক রহমান বলেন, একজন রাজনৈতিক কর্মী, একজন নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি একজন নাগরিকের রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগের অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে নির্বাচন। প্রতিটি নাগরিক যাতে নিজের কথা নিজেই বলতে পারে, সেটা নিশ্চিত করার স্বার্থেই একটি দায়িত্বশীল দল হিসেবে বিএনপি বার বার একটি অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দেয়। আমি বিশ্বাস করি স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে জাতীয় সরকার পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে জনগণ সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পেলে রাষ্ট্র এবং সরকারে জনগণের ইচ্ছা প্রাধান্য পাবে। রাষ্ট্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। 


    তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও রাজনীতির মূল ভিত্তি হচ্ছে জনগণ। জনগণকে দুর্বল রেখে রাষ্ট্র, রাজনীতি, সরকার কিংবা সংস্কার কোনো কিছুকেই শক্তিশালী এবং টেকসই করা সম্ভব নয়; করা যাবে না। নাগরিকদের রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগ ও চর্চার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র, রাজনীতি এবং জনগণ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রের জনগণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠলে ভবিষ্যতে কেউ ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে পারবে না বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। দেশকে কেউ তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে সক্ষম হবে না। 

    তারেক রহমান বলেন, সরকার এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বকে জনগণের মুখাপেক্ষী করা গেলে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব। একই সঙ্গে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করাও সম্ভব হবে। 

    বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত দেড় দশকের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় শেষ পর্যন্ত জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে হাজারো প্রাণের বিনিময়ে স্বৈরাচার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে, যেতে বাধ্য হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাভার-আশুলিয়ায় সবচেয়ে বেশি শহীদ হয়েছে শ্রমজীবী মানুষ। বিশেষ করে এই সাভার-আশুলিয়ায় গণহত্যা চালানো হয়েছে। হত্যা করে লাশগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। লাশের সাথে এমন বর্বরতা, লাশের সঙ্গে এমন নির্মমতা মনে হয় কারবালার নৃশংসতাকেও হার মানিয়েছে। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার পর শ্রমজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। 

    অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, সকল শহীদ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে পতিত, পলাতক, পরাজিত, বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী অপশক্তি রাষ্ট্রের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করার সুযোগ নিতে ওৎ পেতে রয়েছে। সরকারের যে কোনো ভুল সিদ্ধান্তে দেশে গণতন্ত্র উত্তরণের যাত্রাপথকে সংকটে ফেলে দিতে পারে। দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। এ ব্যাপারে আমাদের সবাইকে বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে, থাকা প্রয়োজন।

    তারেক রহমান বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শ্রমজীবী মানুষের সরাসরি কোনো স্বার্থ ছিল না। কারণ তারা সরকারি চাকরির আশা করেননি। পোশাক কারখানা শ্রমিক, রিকশাচালক, দিনমজুর, ভ্যানচালক, ট্রাক চালক, হেলপার, দোকান কিংবা রেস্তোরাঁ কর্মী অথবা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ সকল শ্রেণিপেশার মানুষ কেন সেদিন রাজপথে নেমে এসেছিল। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি এর একটিই কারণ খুঁজে পাই, তা হলো দেশের সকল শ্রেণিপেশার মানুষ, দেশপ্রেমী গণতন্ত্রকামী জনগণ বিশ্বাস করেছে রাষ্ট্র ক্ষমতায় ক্ষমতালোভী যে ফ্যাসিস্ট পালিয়ে গিয়েছে তারা যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকে কৃষক শ্রমিক ছাত্র-জনতা কেউ তাদের গণতান্ত্রিক নাগরিক অধিকার ফেরত পাবে না। তাদের ন্যায্য দাবি আদায় হবে না।

    তিনি আরও বলেন, সেদিন দেশপ্রেমী জনগণ বিশ্বাস করেছিল যে ক্ষমতালোভী ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে সক্ষম হলে দেশের সার্বভৌমত্ব লুন্ঠিত হবে। যে কারণে ফ্যাসিস্টদের সেই স্বৈরাচারের শাসনের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমী শ্রমজীবী কর্মজীবী মানুষ নির্দিধায় শহীদি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিল।

    এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক ও  সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 


    এইচকেআর
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ