ববি ছাত্রলীগ নেতার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিল বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা


বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক ছাত্রলীগ নেতার মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। যিনি ছাত্রদল নেতাদের সহযোগিতায় পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রোববার রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আনন্দ বাজার সেতুর ওপর মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে জানিয়েছেন বরিশাল মহানগর পুলিশের বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম।
এর আগে রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন নির্মাণাধীন নভোথিয়েটার এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা তানজিদ মঞ্জুকে আটক করেছিল শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদ আহনাফ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি ছিল না। তবে সংগঠনটির দুইটি গ্রুপ ছিলো, একটি গ্রুপের ক্যাডার ছিলো মঞ্জু। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর করাসহ নানা অপকর্মের জড়িত ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী রাকিন খান বলেন, সোমবার ইংরেজি বিভাগের এসোসিয়েশন নির্বাচন। নির্বাচনে মঞ্জু একটা গ্রুপকে সার্পোট করছে। সেই গ্রুপের হয়ে প্রচার চালাতে মঞ্জু ক্যাম্পাসে এসছে এমন ঘটনা শুনে সেখানে যাই।
এ সময় তার সঙ্গে ছাত্রদলের মিজান, মিয়া বাবুল ও মিঠুনসহ আরও কয়েকজন ছিল। মেরিন একাডেমির সামনে নভোথিয়েটারে গিয়ে মঞ্জুকে দেখতে পান তারা। তখন মিজান ও মিয়া বাবুল মঞ্জুকে জেরা করতে শুরু করেন।
বিষয়টি পুলিশ ও প্রক্টরকে জানাতে কল দিতে পাশে যান জানিয়ে রাকিন খান বলেন, কিছুক্ষণ পরে গিয়ে দেখি মঞ্জু নেই। মিজান ও মিয়া বাবুলকে জিজ্ঞেস করলে, তারা বলেন মঞ্জু আশেপাশেই আছে। কিন্তু পরে তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত কলা ও মানবিক অনুষদের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাত ৯টার দিকে মঞ্জুকে আটক করা হয়। সাড়ে ৯টার দিকে ছাত্রদলের মিজান, মিয়া বাবুল ও মিঠুনসহ আরও কয়েকজন মঞ্জুর সঙ্গে পার্সোনাল কথা বলার নাম করে মেরিনের সামনের রাস্তার দিকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে তারা বলে মঞ্জুকে পাওয়া যাচ্ছে না, সে পালিয়ে গেছে।
তবে মঞ্জু পালিয়ে যেতে পারলেও তার মোটরসাইকেলটি ফেলে যায়। মোটরসাইকেলটি রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আনন্দ বাজার ব্রীজের উপর নিয়ে যায় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে ছাত্রদলের মিয়া বাবুলকে কল করা হলে ব্যস্ততার অজুহাত দিয়ে কল কেটে দেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কোনো কমিটি না থাকায় বিষয়টি নিয়ে সংগঠনটির আর কেউ কথা বলতেও রাজি হননি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, এক শিক্ষার্থীকে আটকের ঘটনাটি আমি শুনেছি, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। কিন্তু মঞ্জুকে না পেয়ে পুলিশ চলে গেছে।
বরিশাল মহানগর পুলিশের বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগ নেতা মঞ্জুর বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তাকে আটকের পর পুলিশ গিয়ে কাউকে পায়নি।
মোটর সাইকেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার খবর পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, পোড়া মোটর সাইকেল উদ্ধার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখনো কিছু বলেনি। কেউ থানায় অভিযোগও দেয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ক্যাম্পের এসআই অতনু বলেন, পোড়া মোটরসাইকেল উদ্ধার, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়। অনুমতি না পাওয়ায় ঘটনাস্থলে যাননি তিনি।
এইচকেআর
