ঢাকা শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

Motobad news

নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নামতে প্রস্তুত ভোলার ৩ লাখ জেলে

নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নামতে প্রস্তুত ভোলার ৩ লাখ জেলে
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমের দীর্ঘ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবারও ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলার প্রায় তিন লাখ জেলে। এরইমধ্যে মাছ শিকারের জাল, নৌকা ও ট্রলারসহ বিভিন্ন উপকরণ প্রস্তুত ও মেরামতের কাজ শুরু করেছেন তারা। নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে কাঙিক্ষত পরিমাণ ইলিশ শিকার করে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা জেলেদের।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে ভোলার সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জেলেপল্লির জেলেরা নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে ইলিশ শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন পুরোদমে। মাছ শিকারের জাল, নৌকা, ট্রলারসহ বিভিন্ন উপকরণ প্রস্তুত করছেন তারা। কেউ নতুন করে জাল কিনে প্রস্তুত করছেন মাছ শিকারের জন্য। আবার কেউ কেউ নতুন ট্রলার ও নৌকা বানিয়ে শেষ সময়ের মতো প্রস্তুত করে নিচ্ছেন। কেউবা পুরোনো জাল, নৌকা ও ট্রলার মেরামত করছেন। নিষেধাজ্ঞা শেষে ২৫ অক্টোবর দিনগত রাত ১২টার পরে নদীতে নামবেন জেলেরা।


ওই এলাকার জেলে সুমন মাঝি ও সোহেল মাঝি জানান, সরকারি ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে তারা নদীতে ইলিশ শিকারের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। ধারদেনা ও ঋণ নিয়ে নতুন করে জাল কেনা ও পুরোনো ট্রলার মেরামতের কাজ করেছেন। নদীতে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ পেয়ে এসব ধারদেনা পরিশোধ করবেন।

একই এলাকার জেলে খলিল মাঝি ও জাকির মাঝি বলেন, ‌নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারিভাবে ২৫ কেজি করে চাল পেয়েছি। আর সব কিছুই কিনতে হয়েছে। আয়-রোজগার বন্ধ থাকায় ধারদেনা করে সংসার চালাতে হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় এনজিওর কিস্তিও পরিশোধ করতে পারিনি। আমরা নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।


আবুল কালাম মাঝি ও নুর উদ্দিন মাঝি জানান, গতবছর নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে গিয়ে ২-৩ দিন ভালোই ইলিশ পেয়েছেন। তবে এরপর নদীতে ইলিশের দেখা মিলেনি। যে কারণে গতবছর অনেক কষ্টে কাটাতে হয়েছে। ওই বছরের ধারদেনা এখনো পরিশোধ করতে পারেননি। এবারও কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ না পেলে কষ্টের শেষ থাকবে না।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা নদীতে আশানুরূপ ইলিশ শিকার করতে পারবেন বলে আশা করি। বিগত দিনের দারদেনা পরিশোধ করে তারা ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবেন।


তিনি আরও জানান, নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে ভোলার সাত উপজেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী থেকে দুই শতাধিক জেলেকে আটক এবং বিপুল পরিমাণ ইলিশ ও জাল জব্দ করা হয়েছে। এরমধ্যে একশোর বেশি জেলেকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে।

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর দিনগত রাত ১২টা পর্যন্ত ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। ভোলার সাত উপজেলায় বেসরকারি হিসেবে প্রায় তিন লাখ জেলে রয়েছে। এরমধ্যে সরকারিভাবে নিবন্ধত জেলের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন