৩০ নভেম্বর থেকে ফের কর্মবিরতির ঘোষণা প্রাথমিক শিক্ষকদের

তিন দফা দাবি আদায়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে আলটিমেটাম দিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে তাদের সব দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়া না হলে ৩০ নভেম্বর থেকে দেশের সব সহকারী শিক্ষক অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাবেন।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেয় ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’। সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের পাঁচজন আহ্বায়কের মধ্যে চারজন উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন আবুল কাশেম, মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ, খাইরুন নাহার লিপি ও আনোয়ার উল্লাহ। আর অসুস্থতার জন্য সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন না আরেক আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১০ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সহকারী শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিবের আলোচনায় যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছিল সরকার। সেই আলোকে তিন দফা দাবির প্রজ্ঞাপন বা দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে।
একই সঙ্গে গত ৮ নভেম্বর পুলিশের হামলায় আহত শিক্ষকদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিহত শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তারের পরিবারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষতিপূরণসহ তাকে পূর্ণ পেনশন দেওয়ার দাবি জানান শিক্ষক নেতারা।
এর আগে, গত ৮ নভেম্বর তিন দফা দাবিতে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন সহকারী শিক্ষকরা। ওইদিন পদযাত্রা নিয়ে শহীদ মিনার থেকে শাহবাগের দিকে যান তারা। সেখানে কলম সমর্পণ কর্মসূচি করার কথা ছিল শিক্ষকদের। তবে শাহবাগ মোড়ে যাওয়ার আগেই পুলিশ তাদের আটকে দেয়। একপর্যায়ে রাস্তা থেকে শিক্ষকদের সরিয়ে দিতে পুলিশ অ্যাকশনে যায়।
সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল, জলকামান নিক্ষেপের পর শুরু হয় লাঠিচার্জ। এতে শতাধিক শিক্ষক আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি শুরু করেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। ১০ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এবং ১১ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তারা দুই দফা বৈঠক করেন। সেখানে তাদের ১১তম গ্রেড ও অন্য দুটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।
তবে আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি, সরকার বারবার তাদের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করে না। এজন্য এবার তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ৩ দফা দাবিগুলো হলো- দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি।
এদিকে, আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় প্রান্তিক বা বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। তার আগে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণায় বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে পরীক্ষার আগমুহূর্তে প্রায় এক কোটি কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীর ক্লাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এইচকেআর