রোগীর গাড়ি আটকে রাখলেন ট্রাফিক পুলিশ


নগরীর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল থেকে রোগী নিয়ে রূপাতলী ফিরছিলেন মোসলেম। রাস্তায় কোন গাড়ি না পাওয়ায় ব্যাটারি চালিত ভ্যান গাড়িতেই রোগী নিয়ে উঠে পড়েন। রূপাতলীর জাফরান রেস্টুরেন্টের সংলগ্ন পুলিশ চেক পোস্টের সামনে আসলে ব্যাটারি চালিত রিকশা,ভ্যান মহাসড়কে নিষিদ্ধের কথা বলে আটকে দেয় ট্রাফিক পুলিশ নাসির। ভ্যান গাড়িতে অস্বুস্থ রোগী আছে বলার কিছুক্ষণ পর চেক পোস্ট থেকে ছেড়ে দেন তিনি। রূপাতলী বাসায় রোগী রেখে আবার জরুরী ওষুধ নিতে শের-ই বাংলা মেডিকেলের উদ্দেশ্যে একই ভ্যানে ফিরছিলেন এই স্বজন। আবারও জাফরান রেস্টুরেন্ট সংলগ্ন সেই চেক পোস্টে আটকে দেন সেই ট্রাফিক পুলিশ। এবার ভ্যান চালকের নিজের হাতেই গাড়ির হাওয়া ছেড়ে দিতে বাধ্য করেন। শুধু হাওয়া ছেড়েই নিস্তার নয়; গাড়ি চাবি নিয়ে আধা ঘন্টা আটকে রাখেন তিনি। আধা ঘন্টা পর গাড়ি চালককে ফেরত দেন চাবি। এদিকে এই স্বজন পথিমধ্যে গাড়ি না পেয়ে পায়ে হেটেই মেডিকেলের সামনে ওষুধ কিনতে রওয়া হন তিনি।
সোমবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় রূপাতলী জাফরান রেস্টুরেন্ট সংলগ্ন পুলিশ চেকপোস্টে ঘটে এই ঘটনা।
তবে সরেজমিনে দেখা যায়, এই ঘটনার পরপরই চেকপোস্টে বিকাল সাড়ে ৫ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত অন্তত ১৫ টি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যান যাত্রিসহ কোন প্রকার বাঁধা ছাড়াই চেকপোস্ট অতিক্রম করেছে । এমনকি স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ব্যাটারিচালিত রিকশায় ৪ জন পরিবহন করলেও তাদেরকে আটকে দেয়া হয়নি। এছাড়া মটরসাইকেল ১ জনের বেশী চলাচল নিষিদ্ধ থাকলে ২ থেকে ৩ জন লোক নিয়েও এই চেক পোস্ট পার হতে দেখা গেছে। কিন্তু তাদেরকে কোন প্রকার বাধা দেননি সেই ট্রাফিক পুলিশ।
রোগীর স্বজন মোসলেম জানান, ট্রাফিক পুলিশের এমন পক্ষপাতমূলক আচরন সত্যিই দুঃখজনক। আমারা তো জরুরী কাজে বাধ্য হয়ে ব্যাটারিচালিত ভ্যানে উঠেছি। লকডাউনে ঠিকভাবে গাড়ি পাওয়া যায় না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে একটা ভ্যান পেয়েছি কিন্তু এখন দুর্ভোগের শেষ নেই। ওষুধ কিনতে মেডিকেলে যাচ্ছি বলার পরেও আটকে দিয়েছেন। এটা অমানবিক। ব্যাটারিচালিত গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও লকডাউনে এই সংকটময় মুহূর্তে মানবিক দিক থেকেও ছেড়ে দেয়া উচিত। যদি সবাইকে আটকে দিতে তাহলে নিজের মনকে বুঝাতে পারতাম কিন্তু অনেক ব্যাটারিচালিত গাড়ি এই চেকপোস্ট পার হয়ে যাচ্ছে। সবাইকে আটকে রাখা হচ্ছে না। আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত। আমাকে আটকে দিবে ওদিকে আর একজন সামনে থেকে চলে যাবে সেটা তো হতে পারেনা।
এ ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশ নাসিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কাকে ছাড়বো আর কাকে আটকে দিবো সেটার জন্য আপনাকে কৈফিয়ত দিতে হবে নাকি! আমি কি সারাক্ষণই রাস্তায় দাড়িয়ে ডিউটি করবো? রেস্টেরও দরকার আছে। আমার যখন মন চাইবে তখন আটকে দিবো আবার যখন মন চাইবে ছেড়ে দিবো।
এমইউআর
