ঢাকা শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

তুরস্কের দাবানল নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র!

তুরস্কের দাবানল নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র!
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

তুরস্কের ৮১টি প্রদেশের ৪০টিতে দেখা যায় এই জঙ্গলের আগুন। অর্থাৎ দেশের অর্ধেক প্রদেশে কোনো না কোনো জায়গায় বনে আগুন লেগেছে এই ১০-১১ দিনে। মোট ২০৮ এলাকায় আগুন লাগে এর মধ্যে ১৯৬ জায়গায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু এখনো পাঁচটি প্রদেশের ১২টি পয়েন্টে আগুন জ্বলছে। 

গতকাল একটি কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন লাগলে মানুষের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। অতিরিক্ত ক্ষয়ক্ষতি আরে বিস্ফোরণ ঠেকাতে সরকার সব দাহ্য পদার্থ বের করে নিয়ে আসে। প্রায় ১১ ঘণ্টায় ধরে পুড়তে থাকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। এখন সেখানে আগুন নিভে গেছে। অনেকের প্রশ্ন- কেন সরকার কেন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না?

সরকার কি কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না? আসলে দাবানল এমন একটা জিনিস যদি আবহাওয়া অনুকূলে না থাকে তাহলে নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন। কারণ পানি দিয়ে আগুনের গতিরোধ করা সম্ভব না যদি তাপমাত্রা বেশি থাকে আর সঙ্গে প্রচুর বাতাস। তুরস্কের যে আন্তালিয়া মুলা এলাকায় এখন আগুন জ্বলছে সেখানে তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিলোমিটার। তাই এই বিশাল জঙ্গলে পানি দিয়েও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না আগুন। 

আগুন নেভাতে যেমন তুরস্কের বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ ছুটে গেছে তেমনি বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে দমকল বাহিনী, গাড়ি, বিমান, হেলিকপ্টার। এই মুহূর্তে আসল সহয়তা হোলও আগুন নেভানোর গাড়ি, বিমান, হেলিকপ্টার এবং দমকল বাহিনী। এক্ষেত্রে সবার আগে এগিয়ে আসে রাশিয়া এবং ইউক্রেন। আগুন নেভানোর বিমান এবং হেলিকপ্টার পাঠায় তারা। পরে আসে আজারবাইজান। 

বিশাল এক দমকল বাহিনীর বহর পাঠায় তুরস্কে। প্রথমে ১১০ জন কর্মী, বিমান এবং বহু আগুন নেভানোর গাড়ি পাঠায় দেশটি।পরে দ্বিতীয়, তৃতীয় ধাপে আরও বেশি লোক ও সরঞ্জাম পাঠায় আজার বাইজান। সঙ্গে থাকে সেনাবাহিনীর আগুন নেভানোর টিম। সবচেয়ে বেশি সহয়তা আসে এই আজারবাইজান থেকে। কারণ তাদের আছে তুরস্কের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক। আর গতবছরের নাগরনো কারাবাখ যুদ্ধে তুরস্কের সহয়তাও তারা ভুলছে না। 

এরপরে আসে কাতার এবং ইরান। তারাও আগুন নেভাতে বিভিন্ন সরঞ্জাম, বিমান ও হেলিকপ্টার পাঠায়। ইউরোপ থেকেও আসে সহযোগিতা। স্পেন এবং ক্রোয়েশিয়া পাঠায় বিমান।ইসরাইল থেকেও দুটি বিমান আসে আগুন নেভাতে। এখানে ইউরোপের সঙ্গে একটু সমস্যা হয় তুরস্কের। 

অনেক ইউরোপীয় দেশ প্রথমে সাহায্য পাঠানোর প্রস্তাব দেয় কিন্তু পরে তারা সাহায্য পাঠায় না বা পাঠাতে পারে না। যেমন, ফ্রান্স, জার্মানি, এবং গ্রীস।কিন্তু সেটা আবার এরকমভাবে খবরে আসে যে তুরস্ক ওইসব দেশের সাহায্য প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান যে এই সব খবর সঠিক না। কারণ, তুরস্ক এই দুর্যোগে কারো সঙ্গে শত্রুতা পোষণ বা কারো সঙ্গে দম্ভ করবে না। আগুন নেভাতে সবার কাছ থেকেই সহযোগিতা নিতে প্রস্তুত দেশটি। তবে তুরস্কের এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে আর্থিক সাহায্যের দরকার নেই। 

কিন্তু একটা আন্তর্জাতিক চক্রান্ত তুরস্ককে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আন্তর্জাতিক একটা ক্যাম্পেইন চালু করেছে। 

হেল্পতুর্কী নামক এই ক্যাম্পেইনে সু কৌশলে এমনভাবে তুরস্ককে এবং এর সরকারকে আক্রমণ করা হয়েছে যেন, তুরস্কের আগুন নেভানোর যন্ত্রপাতি কেনার টাকা নেই, তুরস্ক অর্থনৈতিক ভাবে শেষ হয়ে গেছে, এই সরকার তুরস্ককে নিঃশেষ করে দিয়েছে। এরা দেশ চালতে পারছে না। তাই আন্তর্জাতিক সহযোগিতা দরকার তাই হেল্প তুর্কি! 


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন