ঢাকা রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

আফগানিস্তান নিয়ে বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া

আফগানিস্তান নিয়ে বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

তালেবান আফগানিস্তান দখল করে নেয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। কেউ উদ্বিগ্ন, কেউ বা আত্মপক্ষ সমর্থন করতে ব্যস্ত।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ''আরো এক বছর বা পাঁচ বছরও যদি মার্কিন সেনা যদি আফগানিস্তানে থাকতো, তাহলেও কোনো ফারাক হতো না। আফগান সেনাই নিজের দেশকে রক্ষা করতে পারল না। অন্য দেশের অসামরিক বিরোধ মেটাতে আমেরিকার সেনা অনন্তকাল ধরে সেখানে থাকবে এটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।''

তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেছেন, যে কারণে আমেরিকা আফগানিস্তানে গিয়েছিল, তা পূর্ণ হয়েছে।
তবে তালেবান যে গতিতে কাবুলসহ গোটা আফগানিস্তান দখল করে নিয়েছে, আমেরিকার সেনা ও মানুষজনকে তড়িঘড়ি করে দেশে ফিরতে হয়েছে, তাতে দেশে রীতিমতো সমালোচিত হচ্ছেন বাইডেন। সাবেক জেনারেল, আফগান আমেরিকান, রাজনৈতিক নেতারা বাইডেনের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। তাদের মতে, বাইডেনের নীতির জন্যই এত দ্রুত আফগানিস্তান দখল করতে পারল তালেবান। পরিস্থিতি আবার আগের মতোই হয়ে গেল।

যুক্তরাজ্যের প্রতিক্রিয়া

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি খুবই কঠিন জায়গায় চলে গেল এবং ভবিষ্যতে তা আরো খারাপ হতো পারে। তার মতে, কোনোরকম চুক্তি ছাড়া সমমনোভাবাপন্ন দেশগুলি যেন তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি না দেয়।

আগামী বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন ডাকা হয়েছে। সেখানে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে। বরিস জনসন বলেছেন, এখন তার প্রথম কাজ হলো, ব্রিটিশ নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা। আর গত ২০ বছর ধরে যারা ব্রিটিশ বাহিনীকে সাহায্য করেছে, সেই আফগানদেরও দ্রুত ব্রিটেনে নিয়ে আসা হবে। আর আফগানিস্তান যাতে আবার জঙ্গিদের রমরমা না হয়, সেটাও দেখতে হবে। 

জাতিসংঘের আবেদন

আফগানিস্তান নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। তবে তালেবান কাবুলে ঢোকার পরেই জাতিসংঘের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে, তারা যেন সংযম বজায় রাখে। জাতিসংঘের মহাসচি গুতেরেস বলেছেন, আফগানিস্তানের নারী ও শিশুদের নিয়ে তিনি খুবই চিন্তিত। তারা যে অধিকার পেয়েছিলেন, তা যেন বজায় থাকে।

পাকিস্তানের সিদ্ধান্ত

পাকিস্তান এখনো কাবুলে দূতাবাস বন্ধ করেনি। তবে পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাহিদ হাফিজ চৌধুরী জিও নিউজকে বলেছেন, ''আফগানিস্তানের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। আমরাও উদ্বিগ্ন। তবে দূতাবাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।''

কর্মী সরায়নি রাশিয়া

পাকিস্তানের মতো রাশিয়াও তাদের দূতাবাস বন্ধ করেনি। কর্মীদেরও দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যায়নি। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কাবুলভ জানিয়েছেন, তালেবান রাশিয়া ও অন্য কিছু দেশকে জানিয়েছে, তারা দূতাবাসের কর্মীদের সুরক্ষা দেবে। তবে অন্য কোন দেশকে এই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তা তিনি জানাননি। কাবুলভ বলেছেন, জাতিসংঘে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই আফগান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।  

জার্মানি চায়

জার্মানি দ্রুত তাদের নাগরিকদের আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে আনছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস জানিয়েছেন, প্রথম আফগানিস্তানের প্রতিবেশী কোনো দেশে জার্মান নাগরিকদের সরিয়ে নেয়া হবে। তারপর সেখান থেকে দেশে ফেরানো হবে। রবিবার রাতেই অনেককে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

সৌদি আরব ও আমিরাত

সৌদি আরব তাদের দূতাবাসের সব কর্মীকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে। সরকারি সংবাদসংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, কাবুল থেকে সব দূতাবাস কর্মী দেশে ফিরে এসেছেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাত জানিয়েছে, তারা এখন পশ্চিমা দেশগুলির কূটনীতিক ও নাগরিকরা যাতে নিরাপদে নিজেদের দেশে পৌঁছে যেতে পারে, সেই সহযোগিতা করছে।

কাতার জানিয়েছে, আফগানিস্তানে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হওয়ায় তারা খুশি।

কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, আফগানিস্তানের মানুষ, বিশেষ করে নারী, বাচ্চা মেয়ে, এলজিবিটি সম্প্রদায়ের পাশে আগের মতোই থাকবে কানাডা। সেই সঙ্গে বেশ কিছু আফগানকে কানাডায় নিয়ে আসার কথাও বলেছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, কাবুলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর আবার দূতাবাস খোলা হবে।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে।


এইচেকআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন