যুব সংগঠন শালিণ্য’র ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

শিশুদের সুষম উন্নয়ন ও যুবদের দক্ষ সংগঠক হিসেবে গড়ে তোলার মহান ব্রত নিয়ে ১৪ বছরে পদার্পণ করতে চলেছে শালিণ্য স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন। সুপ্তিকাল পেরিয়ে ২০০৮ সালের ১৬ই এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু করে শালিণ্য। দীর্ঘ ১৩ বছরে সংগঠনটি বাস্তবায়ন করেছে পাঁচশতাধিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এর মধ্যে অন্যতম গণিত উৎসব, সৃজনীক্যাম্প,পরিচ্ছন্নতা অভিযান, কাব-স্কাউট মিলন মেলা, আইসিটি ক্যাম্পেইন এবং শিশু ও যুবদের নাটক, আবৃত্তি, সংগীত, চারুকলা, হস্তশিল্প, বিতর্ক সহ প্রায় ১৫টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালাসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসসমূহ উদযাপন।
সংগঠনটির বহুমাত্রিক সেবামূলক কাজের জন্য ২০১৭ সালে দেশের শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে সেন্টার ফর রিসোর্স এন্ড ইনফরমেশন (ঈজও) এবং শালিণ্য‘কে “জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড” প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়।
এছাড়াও বরিশাল জেলা প্রশাসন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকেও বহুসম্মাননা অর্জন করেছে সংগঠনটি।
২০১৮ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত হয়ে নিবন্ধন পায় শালিণ্য। সংগঠনটি বাকেরগঞ্জ, গৌরনদী, বানারীপাড়া, বাবুগঞ্জ সহ ৫টি উপজেলাতে শাখা স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে সাংগঠনিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শালিণ্য কর্মী ৫৩৭ জন এবং প্রশিক্ষণ ও সেবাভুক্ত শিশুশিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় তিনসহস্রাধিক। সংগঠনটির উপজেলা সমূহের কার্যক্রম পরিচালনার ৯ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাহী কমিটি সহ সংগঠন পরিচালনায় ২১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি রয়েছে যার সভাপতি হিসেবে আব্দুল খালেক বিশ্বাস কায়সার ও সম্পাদক হিসেবে কিশোর চন্দ্র বালা দায়িত্ব পালন করছেন।
মহামারী করোনাকালীন সময় সংগঠনটির সচেতনতা ক্যাম্পেইন, মাস্ক বিতরণ, পুষ্টিবাগান প্রকল্প, শিশুদের বাড়িতে বসে মেধাচর্চায় ইনডোর ট্রেনিং ও নজেল প্রাকটিস এ্যাট হোম সহ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম ছিল প্রশংসনীয়। এই দুর্যোগকালে সংগঠনটির কার্যক্রমকে গতিশীল করতে ইউনিসেফ ও অপরাজেয় বাংলাদেশ সংগঠনটিকে সাথে নিয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যার ফলে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার প্রায় ১৮০জন শিশুকে নিয়ে ৬টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব গঠন করে সাইন্স এক্সপেরিমেন্ট ফর কিডস, সেলাই প্রশিক্ষণ, জীবন দক্ষতা ও প্রজনন স্বাস্থ্য, বিতর্ক প্রশিক্ষণ, স্কাউট প্রশিক্ষণ, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতা সহ নিয়মিত পাঠ সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে শালিণ্য।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নিজস্ব আয়োজনের পাশাপাশি সমমনা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ কার্যক্রম পরিচালনা করছে শালিণ্য। এপর্যন্ত যে সকল প্রতিষ্ঠানের সাথে সংগঠনটি যৌথ কার্য বাস্তবায়ন করেছে তার মধ্যে অন্যতম এলায়েন্স ফর ইযুথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট, মুকুল মিলন খেলাঘর আসর, নিরন্তর লাইব্রেরি, ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাসটিস,এফপিবিএ,শহিদ আসাদ পরিষদ,বরিশাল ডিবেট এ্যাসোসিয়েশন, প্রীতিলতা ব্রিগেড, বরিশাল যুব সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, ধ্রুবতারা ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, কীর্তনখোলা মুক্ত রোভার দলসহ বরিশাল জেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাথেও।
সংগঠনটির সম্পাদক কিশোর চন্দ্র বালা বলেন, “শালিণ্য’র ১৩ বছরের পথচলায় বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়েছে, আগামীর পথও কুসুমাস্তীর্ণ নয়। দেশ ও জাতীয় উন্নয়নের মূল হাতিয়ার দক্ষ মানব- আর শালিণ্য সেই দক্ষ ও প্রগতিশীল মানুষ তৈরির কাজটি করে চলেছে।”
আগামীদিনে সংগঠনের সার্বিক উন্নয়ন ও সুদূর প্রসারতায় সকলের সুদৃষ্টি ও সহযোগিতা চেয়েছেন সংগঠনের কর্মীবৃন্দ।
শালিণ্য মূল কার্যালয় ভাটিখানা সাহাপাড়ায় সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে পুনরায় শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেছেন শালিণ্য সভাপতি আব্দুল খালেক বিশ্বাস কায়সার।
এমবি