ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

Motobad news

বার্ন ইনস্টিটিউটে স্বজনদের আহাজারি, দোয়া চাইলেন দগ্ধদের পরিবার

 বার্ন ইনস্টিটিউটে স্বজনদের আহাজারি, দোয়া চাইলেন দগ্ধদের পরিবার
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ভয়াবহ ঘটনায় দগ্ধ শতাধিক মানুষের স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আঙিনা। সন্তান, নাতি, ভাই-বোনের জন্য স্বজনদের আহাজারি ও আর্তনাদে চারপাশে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এমন দৃশ্য দেখা যায়।


বার্ন ইনস্টিটিউটের সামনে বসে কাঁদছিলেন ঝর্না আক্তার। তার ছোট ছেলে জুনায়েদ তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী, এ দুর্ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ হয়ে ভর্তি হয়েছে। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‌‘আমার ছেলে খুব ভালো ছিল। মাঠে খেলতে গিয়েছিল, এখন বার্ন ইনস্টিটিউটে। আমি দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই, মহান আল্লাহ যেন আমার জুনায়েদসহ সবাইকে সুস্থ করে দেন।

একইভাবে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুসলিম উদ্দিন, যিনি তার একমাত্র নাতিকে নিয়ে এসেছেন বার্ন ইনস্টিটিউটে। তার নাতিও তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে এবং আজকের দুর্ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ হয়েছে। চোখ মুছতে মুছতে বলছিলেন, ‘আপনারা দোয়া করেন, আমার নাতি যেনো বাঁচে। একমাত্র নাতি আমার...কী কষ্টে আছে তা বলে বোঝাতে পারবো না।’

স্বজনদের আরেকজন সাজ্জাদ, চোখের পানি ফেলতে ফেলতে জানান, তার ভাগনে আফিফ আরিয়ান, সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। আফিফের অবস্থা গুরুতর।

‘আমরা ওকে মানুষ করছি খুব যত্নে, আজ পর্যন্ত কোনো আঘাত লাগতে দেইনি। এখন সে হাসপাতালের বিছানায় দগ্ধ হয়ে পড়ে আছে... কীভাবে সে সহ্য করছে জানি না,’ বলেন কান্নারত সাজ্জাদ।

একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাইম খান এসেছেন তার ছোট বোনকে নিয়ে। তার বোন চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। আগুনে দগ্ধ হয়ে এখন বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি। সাইম বলেন, আমার বোনসহ যারা আহত হয়েছে, সবার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। কেউ যেন এমন পরিস্থিতিতে না পড়ে।

এদিকে, বার্ন ইনস্টিটিউটে অবস্থানরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ দগ্ধ শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চিকিৎসা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে স্বজনদের মানসিকভাবে শক্ত রাখতেও সহায়তা করছে হাসপাতালের কাউন্সেলিং টিম।


এর আগে সোমবার দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজেআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০০ জন দগ্ধ হয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন