দেশে ফিরেই ভোটার হবেন তারেক রহমান


২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রথমবারের মতো ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়। সেসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ছিলেন লন্ডনে। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ছাড়েন এই দম্পতি। ফলে ওই সময় ভোটার হতে পারেননি তারা।
চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে ভোটার হয়েছেন ডা. জুবাইদা রহমান। তবে এখনো ভোটার হননি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রথমবারের মতো ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়। ওই সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান লন্ডনে ছিলেন। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ছাড়েন এই দম্পতি। ফলে সেসময় ভোটারও হতে পারেননি তারা।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করতে এরই মধ্যে কয়েকটি দেশে কার্যক্রম শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যুক্তরাজ্যের লন্ডন, বার্মিংহাম ও ম্যানচেস্টারেও ভোটার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে তারেক রহমান সেখানে ভোটার হাওয়ার জন্য এখনো আবেদন করেননি বলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের নিবন্ধন ও প্রবাসী শাখা থেকে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লন্ডনে প্রবাসীদের নতুন ভোটার হতে গেলে আবেদনকারীকে অবশ্যই লন্ডনের নির্বাচন অফিসে আসতে হবে। কারণ আবেদনকারীর স্বাক্ষর, ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ বাধ্যতামূলক। লন্ডনে তারেক রহমান এখনো আবেদন করেননি বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।
বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন ও এনআইডি প্রদানের কার্যক্রম চলমান। ইসির মিশন অফিসে যে কোনো সময় প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ভোটার হতে পারবেন প্রবাসীরা। এসব দেশে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৮ হাজার ৩২ জন প্রবাসী ভোটার হতে আবেদন করেন। এর মধ্যে মিশন অফিস ২৯ হাজার ৬৪৬ জনের বায়োমেট্রিক গ্রহণ করেছে। ১৭ হাজার ৩৬৭ জনকে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে। আবেদন বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৭৫৬ জনের। ৪ হাজার প্রবাসীর ভোটার হওয়ার আবেদন যাচাই-বাছাই করছে ইসি। তবে এসব তালিকায় নাম নেই তারেক রহমানের।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের নিবন্ধন ও প্রবাসী শাখার এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, তারেক রহমান চাইলে লন্ডনে বসেই ভোটার হতে পারবেন। যুক্তরাজ্যের লন্ডন, বার্মিংহাম ও ম্যানচেস্টারে ভোটার কার্যক্রম চালু আছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তারেক রহমান লন্ডনে ভোটার হবেন না। তিনি বাংলাদেশে এসেই ভোটার হবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
তারেক রহমান ভোটার হয়েছেন কি না জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, তারেক রহমান ভোটার হয়েছেন কি না আমার জানা নেই। ভোটার হলে জানতাম। তবে ওনার ওয়াইফ এনআইডির জন্য সব ধরনের তথ্য আমাদের কাছে দিয়েছেন, ভোটার হয়েছেন এবং স্মার্টকার্ড পেয়েছেন। তবে তারেক রহমান এখনো ভোটার হননি।
প্রবাসীদের ভোটার হতে যা প্রয়োজন
প্রবাসীদের ভোটার হতে গেলে জন্মনিবন্ধন সনদ, শিক্ষা সনদ, চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রদত্ত নাগরিক সনদ, পিতা ও মাতার এনআইডি, মৃত হলে মৃত্যু সনদ, স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি ও নিকাহনামা (বিবাহিত হলে), বাংলাদেশি বৈধ পাসপোর্টের (মেয়াদসহ) ছবিযুক্ত পৃষ্ঠা এবং সর্বশেষ অ্যারাইভাল সিলের পাতা লাগবে। তবে এখন ভোটার হওয়ার জন্য দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণকারীদের জন্য দ্বৈত নাগরিক সনদ জরুরি নয়। নিজ বাড়ির ঠিকানায় ভোটার হওয়ার জন্য বাড়ির ট্যাক্স রসিদ, বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানি/ টেলিফোন বিলের রসিদ লাগবে। ভাড়া বাসার ক্ষেত্রে বাড়িভাড়ার চুক্তিনামা (স্ট্যাম্পে করতে হবে), মালিকের অনাপত্তিপত্র এবং মালিকের এনআইডি, বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানি/ টেলিফোন বিলের রসিদ লাগবে। শনাক্তকারী হিসেবে ভোটার এলাকার আত্মীয়স্বজন, পিতা-মাতা ও পরিচিত কারও স্বাক্ষর লাগবে।
যে কোনো নাগরিক চাইলে এক সপ্তাহে ভোটার হতে পারবেন
যে কোনো সময় নাগরিকরা অনলাইনে ভোটার নিবন্ধনের আবেদন করতে পারবেন। নিজেকে ভোটার নিবন্ধন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করার পর আবেদন কপি প্রিন্ট করতে হবে। আবেদনপত্রে ইউপি সদস্য/ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সিল ও স্বাক্ষর, পরিবারের সদস্যের স্বাক্ষর এবং চেয়ারম্যান/মেয়রের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নং উল্লেখ করে সিল এবং স্বাক্ষরিত করার পর সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে। নির্বাচন অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী কার্যক্রম সম্পাদন করে এনআইডি শাখা। এই প্রক্রিয়ায় এক সপ্তাহ থেকে সর্বোচ্চ ১০ দিন সময় প্রয়োজন হয়। এনআইডির জন্য দ্বৈত নাগরিক সনদ বাধ্যতামূলক নয়।
চলতি বছরের ৬ মে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলে তার সঙ্গে জুবাইদা রহমানও দেশে আসেন। পরে ৫ জুন ডা. জুবাইদা লন্ডনে ফিরে যান।
ডা. জুবাইদা রহমানের বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমায়। তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় নন। তবে আগামী নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী হবেন কি না তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও শিগগির দেশে ফিরছেন- রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন আলোচনা বা গুঞ্জন চলছে। যদিও তারেক রহমান ঠিক কবে নাগাদ দেশে ফিরছেন, সে বিষয়ে বিএনপির নেতারা সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না। তবে তারা ধারণা দিচ্ছেন শিগগির তারেক রহমান দেশে ফিরছেন। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দলীয় সূত্র বলছে, আগামী আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ তারেক রহমানের দেশে ফেরার একটি সম্ভাবনা আছে। তবে সেটিও চূড়ান্ত কিছু নয়। দেশে ফিরেই তারেক রহমান ভোটার হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে ইসির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এইচকেআর
