আগৈলঝাড়া পয়সা স্কুল এ্যান্ড কলেজের সেই অধ্যক্ষকে ভর্ৎসনা

আগৈলঝাড়ায় পয়সা স্কুল এ্যান্ড কলেজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উপেক্ষা করায় সেই অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানকে ভর্ৎসনা করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার সকালে উপজেলার পয়সা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এ্যান্ড কলেজে পরিদর্শনে গিয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী কর্মকর্তাসহ একাধিক সূত্র জানায়, করোনার কারণে দীর্ঘ দেড় বছর পরে পূর্ব নির্ধারিত সরকারী ঘোষণা অনুযায়ী রোববার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যথারীতি ক্লাস শুরু করা হয়। উপজেলার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো সকল প্রস্তুতি নিয়ে পয়সা স্কুলেও ক্লাস শুরু হয়। সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করার বিষয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে পরিদর্শণের অংশ হিসেবে পয়সা স্কুল এ্যান্ড কলেজে পরিদর্শণে যান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাশেম, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগন।
এসময় ওই প্রতিষ্ঠানে মুজিব বর্ষের পতাকা উত্তোলন না করায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানকে ভর্ৎসনা করেন তারা। এর আগে শোকের মাসেও সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে অধ্যক্ষ মিজান জাতির পিতাসহ সকল শহীদদের অবমাননা করে ২০১৯ সালে একটি ছেড়া-ফাঁটা ব্যানার টানিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় ইউএনও’র গঠিত তিন সদস্যর তদন্ত কমিটির সদস্যরা জাতির পিতার অবমাননা করায় ঘটনার সত্যতা পেয়ে ইউএনও বরাবরে তাদের রিপোর্ট দাখিল করেন। তবে ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে অজ্ঞাত কারনে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এর আগে এই অধ্যক্ষ মিজান এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে আ্যসাইনমেন্টের নামে অবৈধভাবে বিনা রশিদে অর্থ উত্তোলন করেছিলেন। ওই সংবাদ প্রকাশের পরে ইউএনও’র নির্দেশে শিক্ষার্থীদের সেই টাকা ফেরত দিয়েছিলেন তিনি।
নাম না প্রকাশের শর্তে ওই প্রতিষ্ঠানের এক সাবেক সদস্য জানান, অবৈধভাবে চাকুরীতে যোগদান করা অধ্যক্ষ মিজান যোগদানের পর থেকেই অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করেছেন। আর সেই অনিয়মকে ঢাকতে বিভিন্ন মাধ্যমে তদ্বির ও অর্থনৈতিক সুবিধা দিয়ে সব অনৈতিক ঘটনার পার পেয়ে যাচ্ছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের অর্থ লুটপাট করে নিজস্ব বলয় তৈরী করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাশেম মুজিব বর্ষের পতাকা উত্তোলন না করায় অধ্যক্ষকে ভর্ৎসনা করার কথা স্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট জেলা প্রশাসকের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ দিন যাবত কোন এ্যাডহক কমিটি না থাকায় ইউএনও’র প্রতি স্বাক্ষরে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন হয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী জেলা প্রশাসক আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসকের সাথে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলবেন বলেও জানান।
অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, তিনি মনে করেছেন যে দপ্তরী জাতীয় পতাকার সাথে মুজিব বর্ষের পতাকাও উত্তোলন করছেন। কর্মকর্তারা বলার পরে তিনি তা না দেখে ওই সময়েই মুজিব বর্ষের পতাকা উত্তোলন করেছেন। বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে জানান তিনি।
এইচেকআর