বরিশালে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে পরেশসাগর মাঠ

বেলস পার্কের পরে নগরবাসীর কাছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত নাম পরেশ সাগর মাঠ। বিশেষ করে জিলা স্কুলের ছাত্রদের কাছে আরও বেশি। প্রতিবছর জিলা স্কুলের বার্ষিক স্পোর্টসও আয়োজিত হতো এই মাঠে। কিন্তু একের পর এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্থাপনা নির্মাণ করায় ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে এই ঐতিহ্যবাহী মাঠটি। এখন মাঠটির এক-তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট আছে। তবে মাঠের এ অংশটুকুও মেলার নামে দখল হয়ে আছে গত ছয় মাস ধরে।গত মার্চে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) উদ্যোক্তা মেলার আয়োজনের পর থেকেই দখল হয়ে আছে মাঠটি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিসিক সূত্রে জানা গেছে, বিসিক ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২২ মার্চ পরেশসাগর মাঠে বিসিক উদ্যোক্তা মেলা শুরু হয়। করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়লে উদ্বোধনের চার দিন পরই মেলা স্থগিত করে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। ফের মেলা শুরুর অজুহাত দেখিয়ে এ পর্যন্ত মাঠ থেকে স্থাপনা অপসারণ করা হয়নি
।ফলে মাঠটিতে প্রতিদিন শত শত শিশু-কিশোর ফুটবল-ক্রিকেট খেলায় থেকে বঞ্চিত , তেমনি প্রবীণরা হাঁটতে এসে যাচ্ছেন ফিরে । পাশাপাশি বিনোদনপিপাসুরাও আসা বন্ধ করে দিয়েছেন ।
সরেজমিনে পরেশসাগর মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, বিশাল মাঠটির চারদিকে টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। ভেতরের চারদিকে শতাধিক স্টল। সেগুলো ভেঙেচুরে কাঠ-বাঁশ ঝুলে আছে। মাঠের ভেতরে জমে আছে বৃষ্টির পানি। তার মধ্যেই সার্কাস, নাগরদোলাসহ বিনোদন সরঞ্জাম পড়ে আছে। মেলার ইজারাদার মনির হোসেন বলেন, বিসিকের সঙ্গে আলোচনা করে অক্টোবরে ফের মেলা শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। মাঠটি টানা ছয় মাস দখলে রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিসিক ও জেলা প্রশাসন তাদের মেলার অনুমতি দিয়েছে। এর কার্যক্রম তারা এখনও বন্ধ করেননি।
বরিশাল জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভায় সভাপতি (জেলা প্রশাসক) পরেশাসগর মাঠ মেলার জন্য বরাদ্দ দেন। তিনি জেলা প্রশাসককে মাঠটি খালি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করবেন।
পরেশসাগর মাঠের একটি অংশে নির্মিত ভবনে স্থাপন করা হয়েছে জেলা প্রশাসক কার্যালয় পরিচালিত কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ বিপ্লব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, তাদের শিক্ষার্থীরাও এ মাঠে খেলাধুলা করে। এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় মাঠটি ব্যবহার করা প্রয়োজন হবে তাদের।
নগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব কুমার রায় পিংকু বলেন, মাঠটি উন্মুক্ত করে দেওয়া না হলে কর্মসূচি নেবেন।
বরিশাল বিসিকের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জালিস মাহমুদ বলেন, বিসিক উদ্যোক্তা মেলা শুরুর পরই করোনার কারণে জেলা প্রশাসক স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন। শিগগির জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলাপ করে ফের মেলার অনুমতি চাইবেন।
বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, পরেশসাগর মাঠে মেলার স্থাপনা এখনও অপসারণ করা হয়নি- বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি এ নিয়ে বিসিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।
এইচেকআর