আগৈলঝাড়ায় শেষ সময়ে জমে উঠেছে পূজার বাজার

আগামী ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাঁচ দিন ব্যাপী প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। তাই শেষ সময়ে জমে উঠেছে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় পূজার নতুন শাড়ি কাপর, কসমেটিক্স ও শিশুদের খেলনার বাজার।
উপজেলা সদর বন্দরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে শেষ সময়ে মধ্যবিত্তরা নতুন শাড়ি, তৈরী পোশাক ও কসমেটিক্সের দোকানে কেনাকাটার জন্য ভীড় করছেন। আগৈলঝাড়া প্রধানত কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ায় অধিকাংশ মানুষের জীবন জীবিকা কৃষির উপর নির্ভর হলেও শেষ মুহুর্তে পূজার আনন্দ সকলকে নিয়ে উপভোগ করার আনন্দের একটুও কমতি নেই তাদের মধ্যে। যাদের পরিবারের সদস্যরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছেন তাদের জন্য নতুন তৈরী জামা কাপড় এলেও এ সুবিধা যাদের নেই তারা এখন শেষ মুহুর্তে আগৈলঝাড়া সদরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারের দোকান ও ফুটপাত থেকে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত লোকজন শেষ মুহুর্তের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করছেন। গভীর রাত পর্যন্ত দোকানপাটে কেনা বেচার ভীড় ছিল লক্ষ্যনীয়।
বাজারে আসা এক ক্রেতা ববিতা মন্ডল জানান, ফুটপাতের দেকানগুলোতে লুঙ্গি, শাড়ি, জামা-কাপড়ের দাম কম হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ সেখান থেকেই চাহিদা অনুযায়ী পরিবারের সদস্যদের জন্য বেশী কেনাকাটা করছেন। এছাড়া নিম্ন আয়ের পরিবারদের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের চেয়ে এবছর শাড়ি, লুঙ্গি, কাপড়ের দাম বেশী। তাই ফুটপাতের দোকানে দাম কম হওয়ায় তারা সেখান থেকে জামা কাপড় কিনছেন।
গৈলা বাজার ব্যবসায়ী সোহেল মুন্সি জানান, পূজা উপলক্ষে মার্কেট ও ফুটপাতের দোকান গুলোতে নতুন পোশাক, জুতা আর কস্মেটিক্সের ব্যাপক সমারহ থাকলেও, করোনা ভাইরাসের কারনে মানুষের আয় কম থাকায় ক্রেতাদের ভিড় একটু কম বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাজারের আরেক ব্যবসায়ী সুশান্ত কর্মকার জানান, এবারে দেশী পোশাকের পাশাপাশি মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় বিভিন্ন থ্রিপিস। ভারতীয় শাড়ির পাশাপাশি ঢাকাই জামদানি শাড়ির বেশ কদর রয়েছে এবারের পূজোতে। পুরুষের পছন্দের তালিকায় এবারো শীর্ষে রয়েছে পাঞ্জাবি। বাচ্চাদের পছন্দের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ব্রান্ডের মেহেদী ও বাহারী ডিজাইনের জামা-কাপড়। পুরুষের তুলনায় মার্কেটগুলোতে নারী ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পরার মতো। ক্রেতাদের মন যোগাতে দোকানে দোকানে ঝুলানো হয়েছে বাহারী রংয়ের বিভিন্ন ধরণের পোশাক, বাজারসহ দোকানে দোকানে করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের আলোকসজ্জা ।
আগৈলঝাড়া সদর বাজারে আসা ক্রেতা মিনাল সমদ্দার, চিত্ত ঘরামী, সুবাস মন্ডল, তন্ময় তালুকদারসহ আরও অনেকে জানান, পূজার আগে পোশাকের দাম স্বাভাবিক থাকলেও পূজার সময় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পোশাকের দাম বাড়িয়ে দেন। ফলে আমাদের মতো ক্রেতাদের বাধ্য হয়ে কয়েকগুন বেশী দামে পোশাক কিনতে হচ্ছে। শেষ সময়ে কাপড়ের দোকান গুলোতে পছন্দের কাপড় হয়তো নাও থাকতে পারে সেই জন্য অনেক ক্রেতা আগেভাগেই পোশাক কিনে নিয়েছেন।
উপজেলা সদর, গৈলা বাজার, পয়সারহাট, রাজিহার বাজার, আস্কর বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে দেখা যায় দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পরার মতো। দুই-এক দিনের মধ্যে ক্রেতাদের ভিড় আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বিক্রি চলবে পূজা পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত বিশেষ করে লক্ষ্মী পূজা পর্যন্ত। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ অন্যবারের তুলনায় এবার দাম একটু বেশী নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তবে অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবী করছেন ব্যবসায়ীরা।
এইচকেআর