পাথরঘাটায় ১৫ বছর খালে গাছের সাঁকো, দুর্ভোগে মানুষ

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরিণঘাটা পর্যটন কেন্দ্রের পূর্ব পাশের একটি খালে কেওড়া গাছের সাকোঁ দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে পাড়াপার করছেন এলাকার মানুষ। এখানের মানুষের দুর্ভোগ চরমে। বিষখালী নদের শাখা খাল হওয়ার কারনে সব সময়ই পানিতে ভড়ে থাকে এই খালটি। গত ১৫ বছর ধরে এই খালে স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে সাঁকো দেন । প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষের চলাচলে এ গাছের সাঁকো জীবন যাত্রাকে ব্যাহত করেছে। জীবনের ঝুকি নিয়ে যাতায়াত করছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা । তবুও মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা এই খালের সাকো।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, এই এলাকার মানুষ শুধুমাত্র মাছ শিকার করে জীবন নির্বাহ করতে এখান থেকেই বিষখালী নদীতে যেতে হয়। তাদের মাছ শিকারের কাজে ব্যাবহৃত সরঞ্জাম মাথায় নিয়ে এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। একটি সেতুর অভাবে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাগামী ছাত্র-ছাত্রীসহ দুই পাড়ের গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই সাঁকোটির ওপর দিয়েই প্রতিদিন চলাচল করছে। সাঁকোটি প্রায় ১০০ ফুট দীর্ঘ। তবে এর পুরোটাই কয়েকটি কেওড়া গাছের খুটি দিয়ে তার উপরে আবারো কেওড়া গাছ দিয়েই লোকজন চলাচল করছে। অনেক স্থানে দেখা গেছে খুটি পচে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সাঁকোতে উঠলে থরথর করে কাঁপতে থাকে শিশু ,নারী ও বৃদ্ধরা। ফলে এ সাঁকো দিয়ে মানুষ ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। অনেক বৃদ্ধ ও শিশুরা উপরে দেয়া গাছ ধরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পার হচ্ছেন। সাঁকোটির উত্তর দিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা ও মক্তবসহ উপজেলার একমাত্র পাথরঘাটাসদরে যেতে হয় এখান থেকে।
স্থানীয়রা দীর্ঘদিন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে এর প্রতিকার চাইলেও তারা কোন পদক্ষেপ নেননি। শুধু নির্বাচন আসলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে খ্যান্ত থাকেন। স্থানীয় নয়ন খা, ইয়াছিন আকনসহ বেশ কয়েকজনে জানান, আমাদের এ এলাকার মানুষের একমাত্র যাতায়াতের পথ এই সাকোঁ। এই খালের ওপর সাকোঁ থেকে প্রায়ই ভেঙ্গে পরে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। কিছুদিন আগে বিষখালী নদীতে মাছ শিকার করতে যাওয়ার সময় খালের মধ্যে সাকো ভেঙ্গে পড়ে গেছিল স্থানীয় কিছু লোক, পাশে লোকজন থাকার কারনে বড় কোন দুর্ঘটান ঘটেনি। তাছারা আমাদের বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে পাঠানোর জন্য সাকো পাড় করে দিতে হয়, না হলে কখন পড়ে বিপদ হয়। যে যখন এখানে থাকে সে তখন পাড় করে দেয় না হলে বাচ্চারা দাড়িয়ে থাকে কখন বড় মানুষ আসে সেই অপেক্ষায়।
তারা আরো জানান, নির্বাচন আসলেই জনপ্রতিনিধিদের চোখ পড়ে আমাদের এই সাকোটিতে, তখন সবাই ব্রিজ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। কিন্তু নির্বাচন গেলে আমাদের কথা ভুলে যায়। আপনাদের মাধ্যমে যেন বড় কর্মকর্তাদের নজরে পরে এবং আমাদের এই খালে ব্রিজটি করে দিলে সাধারন মানুষ বড় বিপদ থেকে রেহাই পেতে পারে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আব্দুস ছত্তার জানান, ওই খালের উপর একটি ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য এলাকাবাসীর দির্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে। এ বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে মাধ্যমে উপজেলা দুর্যোগ ও ত্রানবাস্তবায়ন অফিসে কথা হয়েছে। তারা এসে দেখে গেছে। এখানে একটি কালভার্ট হওয়ার সম্ভাভনা রয়েছে। এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা দুর্যোগ ও ত্রানবাস্তবাায়ন কর্মকর্তা অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইতমধ্যে আমরা সরেজমিনে গিয়ে দেখে এসেছি। মাটির নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে টেস্ট করার জন্য এবং একটি ব্রিজের জন্য প্রস্তাবনাও দেয়া হয়েছে। আশাকরছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কিছু একটা হবে।
এইচকেআর