আমতলীতে ছাত্রীকে ধর্ষণ, ধর্ষক চাচা খালাত বোনসহ গ্রেফতার


আমতলীর কুকুয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামে নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রী ভাতিজীকে ধর্ষণ করেছে দুরসম্পর্কের চাচা। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ এবং পরবর্তীতে ভয় দেখিয়ে ফের পর্নো ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার পর মামলায় ধর্ষক সোহেল (১৭) ও তার সহযোগী খালাত বোন মারুফাকে (১৪) গ্রেফতার করেছে আমতলী থানা পুলিশ। ধর্ষিতাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মামলা ও আমতলী থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের এক স্কুল ছাত্রী একই বাড়ির দুরসম্পর্কের চাচা রাসেল আকনের ঘরে দর্জির কাজ শিখতে যায় ওই ছাত্রী। রাসেলের ছোট ভাই সোহেল আকন প্রায়ই তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছে। ওই স্কুল ছাত্রী তার প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। সোহেল এবং ওই মেয়েটি সম্পর্কে চাচা ভাতিজী এবং একই বাড়িতে তারা বসবাস করে।
গত ৯ আগস্ট বিকেল ৩ টার সময় ওই স্কুল ছাত্রী দর্জির কাজ শেখার জন্য রাসেলের ঘরে গিয়ে দেখে সে ঘরে নেই। এসময় ঘরে ছিল ধর্ষক সোহেল এবং তার খালাত ভাই শামীম। মেয়েটি ঘরে প্রবেশের পর কিছু বুঝে উঠার আগেই সোহেল ঘরের দরজা আটকিয়ে তার খালাত ভাই শামীম এর সহযোগিতায় ওই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ কওর এবং কৌশলে ধর্ষক সোহেল ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখে। ধর্ষণের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সোহেল একাধিক বার মেয়েটিকে ধর্ষণ করে।
এ ঘটনার পর আবার ভয় দেখিয়ে গত ১৭ আগস্ট ধর্ষক সোহেল তার খালাত বোন মারুফাকে মেয়েটির ঘরে পাঠিয়ে তার পর্নো স্থির ছবি মোবাইলে ধারণ করে তা ধর্ষক সোহেলের নিকট সরবরাহ করে।
গত বুধবার সোহেল মেয়েটিকে আবার শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য প্রস্তাব দিলে মেয়েটি তাতে রাজী না হওয়ায় সোহেল তার ধারণ করা ভিডিও ও পর্নো ছবি বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। বিষয়টি মেয়েটির পরিবার জানতে পেরে তার মা বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে সোহেলকে প্রধান করে এবং ধর্ষণে সহযোগিতার জন্য খালাত বোন ফারুফা এবং খালাত ভাই শামীমকে আসামী করে আমতলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর ধর্ষক সোহেল এবং তার খালাত বোন মারুফাকে ওই রাতেই আমতলী থানার পুলিশ গ্রেফতার করে।
ধর্ষিতার মা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ধর্ষক সোহেল সম্পর্কে আমার ফুপাতো দেবর। একই বাড়িতে আমরা বসবাস করি। সম্পর্কে সে আমার মেয়ের চাচা হয়। চাচা হয়েও ও আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে। জোর পূর্বক ধর্ষণ করে ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে ভয় দেখিয়ে একাধিক বার ধর্ষণ করেছে। আবার শারীরিক সম্পর্ক করতে চাইলে মেয়ে রাজি না হওয়ায় পর্নো ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে আমাদের মান সম্মান নষ্ট করেছে। এ ঘটনার কঠিন শাস্তি চাই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নাসরিন সুলতানা জানান, মামলার পর পরই ধর্ষক সোহেল এবং সহযোগিতাকারী খালাত বোন মারুফাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামী শামীম পলাতক রয়েছে। ধর্ষক সোহেলের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
আমতলী থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) রনজিত কুমার সরকার জানান, ধর্ষক সোহেল এবং ধর্ষনে সহযোগিতাকারী খালাত বোন মারুফাকে গ্রেফতারের পর আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ধর্ষিতা মেয়েটিকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এমবি
