জমি বিরোধের মামলায় সর্বস্ব হারিয়েছেন আমতলীর বর্গা চাষী

বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের ষোল হাওলাদার এলাকায় বিরোধীয় জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মামলায় আদালতের নির্দেশে ও বিনা নোটিশে ভেঙে ফেলা হয়েছে মোঃ জামাল হাওলাদার নামে এক বর্গা চাষীর স’মিল, মুরগীর ফার্ম ও পানের বরজ। এতে বর্গা চাষী সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসে গেছেন। এতে তার প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগী দাবী করেন।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া মৌজার হাল এসএ ৩১৬ নং খতিয়ানের ৯১৮, ৯৬৬ ও ৯৬৮নং দাগ থেকে ১ একর ১০ শতাংশ জমি একই এলাকার বর্গাচাষী স্থানীয় নূরুল ইসলাম হাওলাদারের পুত্র মোঃ জামাল হাওলাদার ওই জমির মালিক আঃ রশিদ মাস্টার ও মোঃ কবির মিয়া গংদের কাছ থেকে বাৎসরিক ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে ভাড়া নেন।
গত ১৫ বছর পর্যন্ত ওই বর্গাচাষী ওই জমিতে ১টি স-মিল, ২টি মুরগীর ফার্ম ও ৮টি পানের বরজ নির্মাণ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। কিন্তু ওই জমি নিয়ে সোনাবরু বিবি গংদের সাথে মোঃ আউয়াল গংদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। যা আদালতে পর্যন্ত গড়িয়েছে। ওই মামলায় আদালত থেকে এক পক্ষকে (সোনাবরু বিবি গংদের) চূড়ান্ত ডিক্রি দিয়ে জমি বুঝিয়ে দিতে গিয়ে ওই জমির উপরোক্ত দাগে ভোগ দখলে থাকা ভাড়াটিয়া মোঃ জামালকে কোন প্রকার নোটিশ বা মৌখিকভাবে স্থাপনা সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়নি বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন।
গতকাল (২০ নভেম্বর) সকালে সহকারী জজ আদালত (আমতলী) বরগুনা থেকে নাজির মোঃ ফারুক আহম্মেদ গিয়ে চূড়ান্ত ডিক্রিদারকে (সোনাবরু বিবি গংদের) জমি বুঝিয়ে দেয়। এসময় পুলিশের সহায়তায় ভাড়াটিয়া বর্গাচাষী মোঃ জামালের ওই জমিতে থাকা ১টি স-মিল, ২টি মুরগীর ফার্ম ও ৮টি পানের বরজ ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে লাল নিশান টানানো হয়। ওই বর্গাচাষী জামাল এতে সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসে গেছেন। এতে তার প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বর্গাচাষী মোঃ জামাল মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ভাড়া নেওয়া ওই জমিতে থাকা আমার ১টি স-মিল, ২টি মুরগীর ফার্ম ও ৮টি পানের বরজ আদালতের আদেশে বিনা নোটিশে ভেঙে ফেলেছে। এতে আমি সর্বস্ব হারিয়ে পথের ফকির হয়ে গেলাম। এতে আমার প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ডিক্রি পাওয়া ওই মামলার বিবাদী মোঃ আউয়াল হাওলাদার মুঠোফোনে বলেন, আমরা আদালতের দেয়া কোন নোটিশ আমরা পাইনি।
সহকারী জজ আদালত (আমতলী) বরগুনা নাজির মোঃ ফারুক আহম্মেদ মুঠোফোনে বলেন, আদালতে নির্দেশে আমি চূড়ান্ত ডিক্রিদারকে (সোনাবরু বিবি গংদের) জমি বুঝিয়ে দিয়ে লাল নিশান টানিয়ে দিয়েছি। বিনা নোটিশে স্থাপনা কেন ভেঙেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্গাচাষী কোন নোটিশ পাবেন না। এ মামলার বিবাদীরা বিষয়টি জানেন এবং তারা নোটিশও পেয়েছেন।
এমবি
