আমতলীতে ৭ মাসের শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু


আমতলীর কুকুয়া ইউনিয়নের কেওয়া বুনিয়া গ্রামে শুক্রবার সকালে হানিফ নামে ৭ মাস বয়সী একটি শিশুর রহস্য জনক ভাবে মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে প্রেরণ করেছে। ঘটনার পরপরই বাবা বিপ্লব প্যাদা পলাতক রয়েছে।
জানা গেছে, পূর্ব কেওয়া বুনিয়া গ্রামের খালেক প্যাদার ছেলে বিপ্লব প্যাদার সাথে পাশের কেওয়াবুনিয়া গ্রামের হাবিব মাতুব্বরের মেয়ে কুলসুম বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিপ্লব কুলসুম দম্পতির ৭ মাস আগে হানিফ নামে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। গত এক মাস আগে বিপ্লবের সাথে স্ত্রী কুলসুমের পারিবারিক দ্বন্ধ শুরু হয়। দ্বন্ধের জের ধরে স্ত্রী কুলসুম অভিমান করে ছেলে হানিফকে নিয়ে ২৫ নভেম্বর বাবার বাড়ি চলে আসে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বামী বিপ্লব প্যাদা কুলসুমের বাবার বাড়ি উপস্থিত হয়ে তার নিকট থেকে জোর করে ৬ মাস বয়সী ছেলে হানিফকে নিজের বাড়ি নিয়ে আসে। মা কুলসুম অনেক কাকুতি মিনতি করেও ছেলেকে রাখতে পারেনি। পরের দিন শুক্রবার সকাল ৬টার সময় বিপ্লব প্যাদা ৭ মাস বয়সী ছেলে হানিফকে মৃত্যু অবস্থায় গোপনে নানা বাড়ির বারান্দায় রেখে চলে আসে। ছেলেকে পেয়ে মা কুলসুম জখন আনন্দে আত্মহারা হয়ে কোলে তুলে নেন তখন দেখেন ছেলেটি চোখ খুলছে না। এক পর্যায়ে কুলসুমের ডাক চিৎকার শুনে কুলসুমের মা বাবা উপস্থিত হয়ে দেখেন হানিফ মারা গেছে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আমতলী থানার পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে প্রেরণ করেছে। ঘটনার পর শুক্রবার সকালে আমতলী -তালতলী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সমির চন্দ্র ও আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে বাবা বিপ্লব প্যাদা পালিয়ে গেছে বলে জানায় পুলিশ।
নিহত শিশুর মা কুলসুম বেগম জানান, বৃহস্পতিবার মোরডে গোনে মোর স্বামী বিপ্লব প্যাদা পোলা হানিফকে জোর কইর্যা লইয়া যায়। শুক্ররবার ব্যাইন্যাকালে গোপনে মরা অবস্থায় মোর বাবার বাড়ির আইতনায় (বারান্দায়) রাইখ্যা যায়। মুই পোলাডারে কোলে লইয়া দেহি পোলাডা মরা। মুই কি দোষ করছি এ কথা বলছিলেন আর বিলাপ করছিলেন। বিপ্লব প্যাদা পলাতক থাকায় তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিপ্লবের শ্বশুর হাবিব মাতুব্বর জানান, এক মাস আগে আমার মেয়ে কুলসুমের সাথে জামাইর পারিবারিক দ্বন্ধ হয়। এর জের ধরে কুলসুম আমার বাড়ি চলে আসে। বৃহস্পতিবার জোর করে বিপ্লব তার ছেলেকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। শুক্রবার সকাল ৬ টার সময় নাতি হানিফকে মৃত্যু অবস্থায় আমাদের বাড়ির বারান্দায় গোপনে রেখে যান। আমরা এঘটনার বিচার চাই। আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুর রহমান জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে পাঠানো হয়েছে। থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ঘটনার পরপরই বাবা বিপ্লব প্যাদা পলাতক রয়েছে। তাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এইচকেআর
