বাউফলে আ.লীগের কার্যালয়ে তালা, পৃথক আনন্দ শোভাযাত্রা

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয় ‘জনতা ভবন’-এ তালা লাগিয়ে দেওয়ায় ঢুকতে পারেননি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার। এতে বিজয় দিবস ও ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আসা হাজারো নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম ফিরোজের সমর্থিত নেতা-কর্মীরা ওই তালা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আবদুল মোতালেব হাওলাদার।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোশারেফ হোসেন খান বলেন,বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম ফিরোজের নেতৃত্বে তাঁরা গতকাল (১৫ ডিসেম্বর,বুধবার) গণমিছিল ও জনসভা করেছেন। আজকে (বৃহস্পতিবার) রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি পালন করে সকাল নয়টার দিকে তালা লাগিয়ে চলে গেছেন। সভাপতিকে না জানিয়ে সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার মিছিলের আয়োজন করায় তাঁরা ওই মিছিলে অংশ নেননি।
আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন,‘নানা অনিয়ম ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচিতে তাঁকে দাওয়াত দেওয়া হয় না। তাই তিনি বাধ্য হয়ে বিজয় দিবস ও ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করেছেন। তাঁর ডাকে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নিয়েছেন। দুঃখ হয় আওয়ামী লীগ করেও তাঁরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঢুকতে পারেননি।’
সরেজমিন ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে,মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার। এ উপলক্ষ্যে সকাল ১০ টা থেকে উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার হাজারো নেতা-কর্মী ওই আনন্দ শোভাযাত্রায় যোগদানের জন্য আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হতে থাকে। বেলা ১১ টার দিকে আবদুল মোতালেব হাওলাদার দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখতে পান। যা তিনি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে তাঁর আইডি থেকে লাইভও করেছেন। পরে ১২ টার দিকে আবদুল মোতালেব হাওলাদারের নেতৃত্বে হাজারো নেতা-কর্মী নিয়ে শোভাযাত্র বের হয়। শোভাযাত্রাটি বাউফল পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে বাউফল মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে জমায়েত হয়। পরে জনসভা ও স্বাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।
এর আগে বেলা ১১ টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাউফল পৌরসভার মেয়র মো. জিয়াউল হকের নেতৃত্বে আরও একটি বিশাল আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি উপজেলা সদরের কুন্ডুপট্রি এলাকার আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের (একাংশ) সামনে থেকে বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে কুন্ডুপট্রি এলাকায় গিয়ে জমায়েত হয়। পরে সমাবেশ করে শেষ হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে,দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি দুই ধারায় বিভক্ত ছিল। এক পক্ষে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাংসদ আসম ফিরোজ। অপর পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাউফল পৌরসভার মেয়র মো. জিয়াউল হক। কিন্তু সম্প্রতি নতুন করে সাংসদের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের সঙ্গে বিরোধ মধ্যে দিয়ে তৃতীয় পক্ষের সৃষ্টি হলো।
এমবি
