রাজশাহীতে ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু, নেপথ্যে চোরাচালান!


রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় বেড়াতে এসে উত্তম কুমার বিশ্বাস (৩৯) নামের এক ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের চেউখালী গ্রামে এই অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
খবর পেয়ে বাগমারা থানা পুলিশ শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। তার মৃত্যুর পর মিলছে চোরাচালান সিন্ডিকেটের নানা তথ্য।
মৃত উত্তম কুমার বিশ্বাসের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। গত দুই মাস আগে চেউখালী গ্রামের সাইফুল ইসলামের (৫৪) বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। এরপর থেকে তিনি ওই বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। ভিসা নিয়ে বৈধভাবেই তিনি বাংলাদেশে আসেন বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে সাইফুলের বাড়িতে অবস্থান করছিল উত্তম। সাইফুল ইসলাম ও তার ভাই লুৎফর রহমান এবং উত্তম কুমার চোরাচালানসহ ভারতে লোক পাঠানোর সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। প্রচীন মূর্তি, মুদ্রা ও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে এসে বেচাকেনার অভিযোগও রয়েছে এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। এছাড়া চিকিৎসা ভিসায় ভারতে লোকজন পাঠানোর দালালিও করেন তারা।
এমন ঘটনায় দুই বছর আগে সাইফুল ভারতে গ্রেফতার হন এবং জেলও খাটেন। তার ভাই লুৎফর একাধিক মামলার আসামি হয়ে পালিয়ে গিয়ে কয়েক বছর ধরে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বসবাস করছেন। সেই সুবাদে সাইফুলের বাড়িতে ভারতীয় লোকজনের আসা-যাওয়া রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে রাজশাহীর বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, শনিবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ওই গ্রামে যায়। পরে সাইফুল ইসলামের বাড়ি থেকে উত্তমের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
তিনি বলেন, এর আগে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এতে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। এরপরও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে আসার পর বিষয়টি আরও নিশ্চিত করে বলা যাবে।
ওসি আর বলেন, বর্তমানে স্থানীয় সূত্রে পাওয়া তথ্যগুলোর সত্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু কি না, তা এখনই বলা কঠিন। তাই এই ঘটনায় আপাতত একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা করা হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অন্য কিছু পাওয়া গেলে সেই অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএম
