জলদস্যুর কবলে পড়া চরফ্যাশনের ২০ জেলে ভারতে আটক

সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে জলদস্যুর কবলে পড়েন ভোলার চরফ্যাশনের ২০ জেলে। দাবি করা টাকা না পেয়ে জলদস্যুরা সব জেলের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। নিয়ে যায় সঙ্গে থাকা খাবার ও ট্রলারের জ্বালানি। শেষে ইঞ্জিন বিকল করে সাগরে ভাসিয়ে দেয়। এক সপ্তাহ অথৈ সাগরে না খেয়ে ভাসতে ভাসতে ট্রলারটি ভারতের ওডিশা উপকূলে চলে যায়। ২৭ ডিসেম্বর ভারতীয় জেলেরা তাদের উদ্ধার করলেও ট্র্রলারসহ ২০ জেলে আটক হন পারাদীপ সামুদ্রিক থানা পুলিশের হাতে। আইনি জটিলতার কারণে দেশে ফিরতে পারছেন না এই অসহায় জেলেরা। এ অবস্থায় তাদের ফিরে পেতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্বজনরা।
জেলেদের স্বজনরা জানান, গত ২৭ ডিসেম্বর ২০ জেলে উদ্ধার এবং আটকের ঘটনা নিয়ে ভারতের একটি হিন্দি টেলিভিশন চ্যানেলে খবর প্রকাশের পর স্বজনরা তাদের বেঁচে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এর পর গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আটক জেলে নুরুল ইসলাম মাঝি মোবাইল ফোনে তার পরিবারকে ভারতে আটক থাকার তথ্য নিশ্চিত করেন। এ নিয়ে দরিদ্র জেলে পরিবারগুলোতে হাহাকার চললেও স্বজনদের ফিরিয়ে আনার উপায় দেখছেন না তারা।
বেতুয়াঘাটের আড়ত মালিক আবুল কাশেম জানান, গত ৬ ডিসেম্বর চরফ্যাশনের বেতুয়াঘাট থেকে সাগরের উদ্দেশে ছেড়ে যায় আল্লাহর দান মাছধরা ট্রলার। এর দুই দিন পর ট্রলারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। জেলেরা বেঁচে আছেন কিনা এ নিয়ে অজানা আশঙ্কায় ছিলেন তারা। গত ২০ ডিসেম্বর একটি মোবাইল নম্বর থেকে জলদস্যু দলের সদস্য পরিচয় দেওয়া এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাকে ফোন করে জানান, ২০ জেলেসহ ট্রলারটি জিম্মি করা হয়েছে। তাদের মুক্তির জন্য দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ওই ব্যক্তি। তিনি জলদস্যুদের দাবি অনুযায়ী মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসের মাধ্যমে ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু বাকি টাকা নিয়ে দেনদরবার করায় ক্ষুব্ধ জলদস্যুরা জিম্মি জেলেদের ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল করে ট্রলারসহ ২০ জেলেকে সাগরের গভীর স্রোতে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে মোংলা কোস্টগার্ডের তরফ থেকে ভারতের উড়িষ্যার পারাদীপে পুলিশের হাতে ২০ জেলে আটক থাকার খবর পান তারা।
ভারতে আটক প্রধান মাঝি নুরুল ইসলামের ছেলে মনির হোসেন জানান, কীভাবে তার বাবাসহ আটক ২০ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, তা তাদের জানা নেই। তিনি এ বিষয়ে বাংলাদেশের ভারতীয় হাইকমিশনসহ সরকারের সর্বোচ্চ মহলের দ্রুত হস্তক্ষেপ এবং কার্যকর সহযোগিতা দাবি করেন।
কোস্টগার্ড চর মানিকা জোনের কন্টিজেন্ট কমান্ডার হারুন অর রশিদ জানান, বিষয়টি তার জানা নেই।
ইউএনও আল নোমান জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
এসএম
