ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

Motobad news

নিষেধাজ্ঞার পরও মাইকিং করে বিক্রি হচ্ছে জাটকা!

নিষেধাজ্ঞার পরও মাইকিং করে বিক্রি হচ্ছে জাটকা!
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

চরফ্যাশন উপজেলায় জেলেদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে জাটকা সংরক্ষণের উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। নদীতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলছে জাটকা শিকার। বাজারে মাইকিং করে বিক্রি হচ্ছে জাটকা।

২০২১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা আহরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। কিন্তু ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় অভিযান চোখে পড়ছে না। বরং নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই সেখানে মাইকিং করে বিক্রি হচ্ছে জাটকা ইলিশ। এদিকে জাটকা সংরক্ষণ মৌসুমে বেকার জেলেদের জন্য বরাদ্দ করা চালও তারা পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে।

শনিবার উপজেলার দক্ষিণ আইচা বাজারের মেইন সড়কের পাশে মাইকিং করে জাটকা ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে সবুজ নামে এক মৎস্য ব্যবসায়ীকে। মাইকিংয়ে তিনি ৫০০ টাকা মণ করে জাটকা ইলিশ বিক্রি করেছেন।

দক্ষিণ আইচায় নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক জাটকা বিক্রয়ের বিষয়ে এক ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, মাছ বিক্রি ছাড়া বিকল্প কোনো কাজ না থাকার কারণে বাধ্য হয়েই তাদের জাটকা বিক্রি করতে হয়। আর এ সময়টায় অন্য কোনো মাছ না পাওয়ায় তারা জাটকা বিক্রি করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী থেকে প্রতিনিয়ত জেলেরা জাটকা ধরে চরফ্যাশনের বিভিন্ন হাটবাজার ও গ্রামে চাপিলার নামে বিক্রি করছে। এখন ৫০ টাকায় দু-তিন ইঞ্চি আকারের যে জাটকার ভাগ বিকিকিনি হচ্ছে, তা দুই মাস পরেই দাম হতো এক লাখ টাকা। এভাবেই প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার ইলিশ প্রজাতি নিধন করে টমটম ও বোরকে করে চরফ্যাশনের বিভিন্ন গ্রামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে উপজেলার ছোট-বড় ২৩টি মাছ ঘাটে। কোস্টগার্ড ও পুলিশকে ম্যানেজ করে যেমন জাটকা ধরা হচ্ছে, তেমনি বাজারেও বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তারা জানান, গত কয়েক দিন ধরে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর বিভিন্ন এলাকায় মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে একশ্রেণির প্রভাবশালীর নৌকা, ট্রলার নিয়ে রাত দিন জাটকা ইলিশ ধরছে।

এসব এলাকায় প্রতিদিন ১০ টন জাটকা ইলিশ নিধন করা হয় বলে জানান খেজুরগাছিয়া ঘাটের ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম। পশ্চিম পারের এলাকার এক শ্রেণীর জেলে জাটকা ধরে তাদের এলাকায় বিক্রির জন্য আসে। গভীর রাতে এসব জাটকা বিকিকিনি হচ্ছে। ভোর না হতে তা ঝুঁড়ি ভরে গ্রামে গ্রামে চাপিলা বলে ৫০-৭০ টাকা করে ভাগ বিক্রি করা হয়। এখন যে মাছ ৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে তা দুই মাস পরেই এক লাখ টাকা দাম হতো বলেও জানান স্থানীয়রা। তারা অভিযোগ করেন কোস্টগার্ডের কাছেও বিষয়টি ওপেন সিক্রেট।

কোস্টগার্ডকে ম্যানেজ করেই এসব মাছ ধরা হচ্ছে। সাধারণ জেলেদের অভিযোগ তাদের ম্যানেজ করেই চিহ্নিত জেলেরা জাটকা ধরছে। এদিকে নদীতে জাটকা ধরে নদীর মধ্যেই বড় ট্রলারে জাটকাসহ অপরাপর মাছ মজুদ করা হয়। পরে তা ওপেন ডাকে বিক্রি করা হয় বলেও জানান স্থানীয় এক মুদি ব্যবসায়ী।

এ ছাড়া হাতিয়া-মনপুরা-দৌলতখান-ঢাকা রুটের লঞ্চ ও চরফ্যাশন ঘোষের হাট-ঢাকা, লালমোহন-ঢাকা বোরহানউদ্দিন-ঢাকা রুটের লঞ্চে জাটকা ইলিশ পাচার করা হচ্ছে।

এ বিষয় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন