ছুটির দিনে পর্যটকের ঢল নেমেছে কুয়াকাটায়


পর্যটকদের আগমনে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। সৈকতের কোথায় যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। বৃহস্পতিবার পর্যটকদের আগমন কম হলেও শুক্রবার ভোররাত থেকে দিনভর পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতে এসে ভিড় জমান। শনিবার পর্যন্ত এমন ভিড় থাকবে বলে জানান পর্যটককেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরা।
কুয়াকাটা সৈকত ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমের শেষভাগে প্রচণ্ড খরতাপে আগত পর্যটকরা সমুদ্রের নোনা জলে গা ভাসিয়ে আনন্দে মেতেছেন। সৈকতে সেলফি তুলে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকে আবার সৈকতের বেঞ্চে বসে উপভোগ করছেন প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্য। সৈকতের দোকান, ঝিনুক মার্কেট, রাখাইন মার্কেটসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বেচাকেনার ধুম পড়েছে। খাবার হোটেলগুলোতেও উপচে পড়া ভিড়। সৈকতের ঝাউবাগান, শুঁটকি পল্লী, লেম্বুর চর, সুন্দরবনের পূর্বাংশ ফাতরার বন, গঙ্গামদির লেক, চর বিজয়, বৌদ্ধ বিহার, কুয়াকাটার কুয়া, রাখাইন পল্লীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত ছিল।
বেশিরভাগ পর্যটকই বাস নিয়ে মহল্লাভিত্তিক পিকনিকে এসেছেন। পিকনিকে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের অনেককেই রান্না করে খেতে দেখা গেছে। অনেকে রাতে এসে সকালে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য অবলোকন শেষে রাতে আবার নিজ গন্তব্যে ফিরে যাচ্ছেন। আগত পর্যটকদের বেশিরভাগই উত্তর পশ্চিমাঞ্চল থেকে এসেছেন।
মাদারীপুরের শিবচর থেকে ভ্রমণে আসা একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা আহম্মেদ আলী বলেন, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য, রাখাইন মার্কেট, বৌদ্ধ মন্দির, কুয়াকাটার কুয়া ঘুরে দেখেছি।
তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে আমাদের সংস্থা থেকে দুই শতাধিক কর্মী কুয়াকাটা আনন্দ ভ্রমণে আসবেন। ১৭-১৮ মার্চের জন্য অগ্রিম রুম বুকিং দিতে এসেছি।
পর্যটক ছাবের মুসল্লি বলেন, এখানে প্রচুর পরিমাণে পর্যটকদের আগমন ঘটছে। সেই তুলনায় অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগসহ সুযোগ-সুবিধায় অনেকটাই ঘাটতি রয়েছে। এখানে বিচের সৌন্দর্যবর্ধনসহ অবকাঠামোগত আরও উন্নয়ন প্রয়োজন রয়েছে। কারণ পদ্মা সেতু খুলে দিলে এখানে পর্যটকদের ঢল নামবে। যা সামাল দিতে আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে।
সৈকতের ফিশ ফ্রাই ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই সৈকতে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। আমাদের বিক্রি খুব ভালো হচ্ছে।
অভিজাত আবাসিক হোটেল সিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলাসের জেনারেল ম্যানেজার আল আমিন খান উজ্জল জানান, ফাল্গুন মাসজুড়েই পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তার রিসোর্টসহ প্রতিটি হোটেলেই শতভাগ বুকিং রয়েছে। আগামী সপ্তাহের ১৭, ১৮, ২৪ ও ২৫ মার্চ অগ্রিম বুকিংয়ের জন্য পর্যটকরা যোগাযোগ করছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক জানান, অসংখ্য পর্যটকের পদভারে মুখর কুয়াকাটা সৈকত। আগত এসব পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সজাগ দৃষ্টি রেখেছে। দর্শনীয় স্থানগুলোতে টহল জোরদার করা হয়েছে।
এসএমএইচ
