ঢাকা শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

সাংবাদিক হেনস্তা : ববি শিক্ষক সমিতির নিন্দা ও প্রতিবাদ

সাংবাদিক হেনস্তা : ববি শিক্ষক সমিতির নিন্দা ও প্রতিবাদ
ছবি : সংগৃহীত
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আটক ও হেনস্তা করায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ আরিফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ খোরশেদ আলম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে 'একজন সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা ও সচিবালয়ের মতো রাষ্ট্রের শীর্ষ প্রশাসনিক দপ্তরে দীর্ঘ সময় ধরে আটকে রেখে মানসিকভাবে নির্যাতনের ঘটনা অপেশাদারি ও কর্তৃত্ববাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ' বলে অভিহিত করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

লিখিত বিবৃতিতে শিক্ষক সমিতি বলেন, গত ১৭ মে ২০২১ ইং তারিখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র অনুসন্ধানী সাংবাদিক জনাব রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মন্ত্রণালয়ের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। উক্ত ঘটনাটি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিরও নজরে এসেছে এবং অন্যান্য সংগঠনের ন্যায় এই সংগঠনটিও এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং সচিবালয়ের মত রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গায় এ ধরনের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সাংবাদিক রোজিনাকে একান্ত সচিবের কক্ষে আনুমানিক বেলা তিনটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত (প্রায় ছয় ঘণ্টা) আটকে রাখা হয়। এ সময় তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানির শিকার হন। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁকে অবমাননাকর ও অপমানসূচক কথাবার্তাও বলেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁর দেহ তল্লাশিপূর্বক, ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেন। এছাড়াও, মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মচারী রোজিনাকে জোরপূর্বক ও নিয়মবহির্ভূত উপায়ে তল্লাশি করেছিলেন-এমন ঘটনা সম্বলিত একটি ভিডিও ক্লিপ আমাদের নজরে এসেছে। স্বাভাবিক কারনেই জনমনে প্রশ্ন জেগেছে, এটি তাঁকে পরিকল্পিতভাবে কালিমা লেপনের চক্রান্ত কি না। কেননা, সম্প্রতি ওই সাংবাদিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি ও অনিয়ম বিষয়ক বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। ফলে, তিনি ওই মন্ত্রণালয়ের কারও কারও বিরাগভাজন হয়ে থাকতে পারেন।

মাননীয়  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান করোনা মহামারী পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে দূরদর্শিতা ও প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন, তা রাষ্ট্রের কতিপয় ব্যক্তির দুর্নীতি ও বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে ম্লান হতে দেওয়া যাবে না। সমাজের যেকোনো অসংগতি তুলে ধরাই গণমাধ্যমের কাজ। পেশাগত দায়িত্ব পালনে ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনানুসারে সুরাহা হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু একজন সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা ও সচিবালয়ের মতো রাষ্ট্রের শীর্ষ প্রশাসনিক দপ্তরে দীর্ঘ সময় ধরে আটকে রেখে মানসিকভাবে নির্যাতনের ঘটনা অপেশাদারি ও কর্তৃত্ববাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ। এ ঘটনা সাধারণ মানুষের কাছে এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও দেশে গণমাধ্যমের বিদ্যমান স্বাধীনতা সম্পর্কে একটি ভুল বার্তা দিচ্ছে।

দেশের সুষম উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পেশার মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার সম্পর্ক বজায় থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তির অদক্ষতা, অপেশাদারি ও কর্তৃত্ববাদী আচরণের কারণে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পেশায় কর্মরত মানুষের মধ্যে নানা সময়ে ক্ষোভ ও হতাশা লক্ষ্য করা গেছে। এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকারের ধারাবাহিকতা ও গতিশীলতা নষ্ট করার ষড়যন্ত্র কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা উচিত৷ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া ও উল্লিখিত সাংবাদিক যাতে ন্যায় বিচার পায় সেটি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে।'


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন