ঢাকা শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

বরিশালে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনার হারে ৭.৯৬ ভাগ প্রাণহানি

বরিশালে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনার হারে ৭.৯৬ ভাগ প্রাণহানি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ঈদুল ফিতরের আগে-পরে ১৪ দিনে অর্থাৎ ৭ মে থেকে ২০ মে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৩৯টি। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনার হার ৬.৬৯%। সে হিসেবে ৮ বিভাগের মধ্যে কমের দিক থেকে বরিশালের অবস্থান ৬ষ্ঠ।

অপরদিকে দুর্ঘটনায় ৭.৯৬% মৃত্যুর হার নিয়ে তালিকায় কমের দিক থেকে ৫ম স্থানে রয়েছে বরিশাল।

আর সারাদেশে নিহত হয়েছেন ৩১৪ জন এবং আহত ২৯১ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৪৩, শিশু ২৮জন।  ১২১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৩৪ জন, যা মোট নিহতের ৪২.৬৭ শতাংশ।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৫০.৬২ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৭৬ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২৪.২০ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৩৭ জন, অর্থাৎ ১১.৭৮ শতাংশ।

এই সময়ে ৪টি নৌ দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত এবং ৭ জন আহত হয়েছে। ১টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৩৪ জন (৪২.৬৭%), বাস যাত্রী ৪ জন (১.২৭%), ট্রাক-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি যাত্রী ১৭ জন (৫.৪১%), মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার যাত্রী ২৯ জন (৯.২৩%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (সিএনজি-ইজিবাইক-অটোরিকশা-টেম্পু) ৩৩ জন (১০.৫০%), নসিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-চান্দের গাড়ি যাত্রী ১৬ জন (৫.০৯%), প্যাডেল রিকশা, বাইসাইকেল আরোহী ৫ জন (১.৫৯%) নিহত হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৯৪টি (৩৯.৩৩%) জাতীয় মহাসড়কে, ৮৯টি (৩৭.২৩%) আঞ্চলিক সড়কে, ৩৪টি (১৪.২২%) গ্রামীণ সড়কে, ১৮টি (৭.৫৩%) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৪টি (১.৬৭%) সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন
দুর্ঘটনাসমূহের ৪৪টি (১৮.৪১%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৯৫টি (৩৯.৭৪%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৭৬টি (৩১.৭৯%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ১৯টি (৭.৯৪%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৫টি (২.০৯%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

দুর্ঘটনায় আক্রান্ত / দায়ী যানবাহন
দুর্ঘটনার জন্য দায়ী- ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ ২২.৫০ শতাংশ, ট্রাক্টর-ট্রলি ৩.৭১ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-এ্যাম্বুলেন্স-জীপ ৯.৯৭ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ৪.৮৭ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২৯.২৩ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা- টেম্পু) ২০.৪১ শতাংশ, নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-চান্দের গাড়ি ৬.৭২ শতাংশ এবং প্যাডেল রিকশা-রিকশা ভ্যান-বাইসাইকেল ২.৫৫ শতাংশ।

দুর্ঘটনায় আক্রান্ত যানবাহনের সংখ্যা
দুর্ঘটনায় আক্রান্ত যানবাহনের সংখ্যা ৪৩১টি। (ট্রাক ৬২, বাস ২১, কাভার্ডভ্যান ১২, পিকআপ ২৩, ট্রলি ৭, ট্রাক্টর ৯, মাইক্রোবাস ২৪, প্রাইভেটকার ১৬, এ্যাম্বুলেন্স ১, জীপ ১, র‌্যাবের পিকআপ ১, মোটরসাইকেল ১২৬, ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-টেম্পু ৮৮, নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-চান্দের গাড়ি ২৯ এবং প্যাডেল রিকশা, রিকশাভ্যান, বাই-সাইকেল ১১টি।

দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণ
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ৫.৮৫%, সকালে ২৮.৮৭%, দুপুরে ২২.৫৯%, বিকালে ২৩%, সন্ধ্যায় ৭.৯৪% এবং রাতে ১১.৭১%।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ৩৩.৪৭%, প্রাণহানি ৩২.৮০%, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৬.৭৩%, প্রাণহানি ১৪.৯৬%, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৪.৬৪%, প্রাণহানি ১৬.২৪%, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ৮.৭৮%, প্রাণহানি ৯.৮৭%, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৬.৬৯%, প্রাণহানি ৭.৯৬%, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৭.৫৩%, প্রাণহানি ৭.৬৪%, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ৬.২৭%, প্রাণহানি ৫.৪১% এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.৮৫%, প্রাণহানি ৫.০৯% ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৮০টি দুর্ঘটনায় নিহত ১০৩ জন। সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে। ১৪টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৬ জন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত। সবচেয়ে কম জামালপুর জেলায়। ২টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কেউ হতাহত হয়নি।

আহত ও নিহতদের পেশাগত পরিচয়
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্য ২ জন, র‌্যাবের কর্মকর্তা ১ জন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ২ জন, স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষক ৭ জন, আইনজীবী ১ জন, চিকিৎসক ২ জন, এসি ল্যান্ডের ড্রাইভার ১ জন, ইংল্যান্ড প্রবাসী ১ জন, স্থানীয় সাংবাদিক ৩ জন, ব্যাংক কর্মকর্তা ৪ জন, মসজিদের ইমাম ৩ জন, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী ৫ জন, ঔষধ ও বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিক্রয় প্রতিনিধি ৯ জন, স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ১৮ জন, পোশাক শ্রমিক ৯ জন, মটর শ্রমিক ১ জন, নির্মাণ শ্রমিক ৩ জন, রাজমিস্ত্রি ২ জন, মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধি ২ জন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ৬ জন এবং চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ জন ছাত্রসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪৩ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাংসদ এবং কালীগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান- এরা দুইজন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন