ঢাকা শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

Motobad news

কিশোরীকে আটকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: ছদ্মবেশে আসামি ধরল পুলিশ

কিশোরীকে আটকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: ছদ্মবেশে আসামি ধরল পুলিশ
ছদ্মবেশে আসামি ধরে পুলিশ, পেছনে মাঝেরজন আসামি উজ্জল
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে এক কিশোরীকে আটকে রেখে রাতভর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে বখাটেদের একটি চক্র। ধর্ষকদের নির্যাতনে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত আড়াইটার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর দায়ের করা মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো রাজাপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. রুহুল আমিন চৌকিদারের ছেলে মো. আমজাদ হোসেন আরিয়ান (২৫) ও একই এলাকার মো. তছির হাওলাদারের ছেলে মো. উজ্জল হাওলাদার (২২)।

এ মামলায় মো. পান্নু ও মো. ফোরকান নামের দুই আসামি পলাতক রয়েছে।  

আজ শুক্রবার (২৪ জুন) ভোলার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরমান হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ভিকটিমের দায়ের করা মামলার আসামিরা মামলার পর থেকেই পলাতক ছিল। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে গত সোমবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় প্রধান আসামি মো. আমজাদ হোসেন আরিয়ানকে ঢাকার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার গোদনাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক অপর আসামি উজ্জলকে ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ও পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা রৌদ্দেরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। উজ্জলকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে পাঠানো হবে।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরী ঢাকায় একটি গার্মেন্টে কাজ করত। তার সঙ্গে এক ছেলের বিয়ে ঠিক হয়। গত রোজার ঈদের পর পরিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। গত ১ মে রোজার ঈদের এক দিন আগে ওই কিশোরী ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে ভোলার ইলিশাঘাটে নামে। সেখান থেকে তার হবু স্বামীকে (বর্তমানে বিবাহিত) সঙ্গে নিয়ে একটি রিকশায় করে সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের শ্যামপুরে তার নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে ওই ইউনিয়নের চর মনসা এলাকার সড়কে আসামি আরিয়ান ও তার সহযোগী উজ্জল, পান্নু, ফোরকানসহ ৫-৭ জন মিলে অটোরিকশাটির গতিরোধ করে। পরে রিকশার চালককে মারধর করে ভিকটিম কিশোরী ও তার হবু স্বামীকে পার্শ্ববর্তী একটি বসতঘরে নিয়ে আটক রাখে। সেখানে কিশোরীকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে তারা। এদের দুজনের কাছ থেকে জোরপূর্বক কিছু স্বীকারোক্তি আদায় করে ভিডিও ধারণ করে এবং তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও নগদ অর্থ নিয়ে যায়। তাদের অমানুষিক নির্যাতনে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে আসামিরা রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে তাদেরকে ছেড়ে দেয়।

ঈদের পর আসামিরা তাদের কাছ থেকে নেওয়া মোবাইল ফেরত পেতে টাকা দাবি করে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে গত ৮ মে কিশোরী বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে ভোলা সদর মডেল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। মামলা নম্বর-১৫। 

মামলার পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আরমান হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম মাঠে নামে। প্রথমে মামলার এক নম্বর আসামি মো. আমজাদ হোসেন আরিয়ানকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তার দেওয়া তথ্যের আলোকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মো. উজ্জল হাওলাদারকে ছদ্মবেশে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ভোলা সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আরমান হোসেন জানান, পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলামের নির্দেশে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনার দিন সংঘটিত অপরাধের বিস্তারিত তথ্যসহ অন্যদের বিষয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে। তাদের দেওয়া তথ্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করে জড়িত অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন