ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

Motobad news

চরফ্যাশনে জোয়ারের পানিতে ২৫ গ্রাম প্লাবিত

চরফ্যাশনে জোয়ারের পানিতে ২৫ গ্রাম প্লাবিত
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

উপকূল জুড়ে অস্বাভাবিক পূর্ণিমার জোয়ারে নদীর পানির উচ্চতা তিন-চার ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চরফ্যাশন উপজেলার অন্তত ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। 

দুর্ভোগে রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। জানা গেছে, গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় পূর্ণিমা শুরু হয়। পূর্ণিমার কারণে বাড়তে শুরু করে প্রতিটি নদ-নদীর পানির উচ্চতা। বেড়েছে বাতাসের চাপও। 

গ্রামের সড়কগুলো প্লাবিত হওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। এ ছাড়া ফসলি জমি, মাছের ঘের, পুকুর ডুবে গেছে। ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায়  দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন।  ইতোমধ্যে জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে উপকূলিয় ইউনিয়ন ঢালচর, কুকরি মুকরি, মুজিব নগর,  চরমানিকা, জাহানপুর, মাদ্রাজ  ইউনিয়নের অনেকাংশে পনির উচ্চতা বৃদ্ধির কারনে মাছ গবাদিপশু, ফসলের ব্যাপক ক্ষতিকর সম্ভাবণা দেখা দিয়েছে। 

ঢালচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার বলেন, যেহেতু আমার ইউনিয়নের সবগুলো রাস্তাই কাঁচা তাই অস্বাভাবিক  জোয়ারের প্রভাবে আমার ইউনিয়নের  বেশ কিছু সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে।  এদিকে পূর্ণিমার প্রভাবে কোমরপানিতে ডুবে রয়েছে ঢালচর, চরপাতিলা, চরনিজাম, চরমাদ্রাজ, জাহানপুর, মুজিবনগর, নজরুল নগর,চরমানিকা ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকা। দিনে-রাতে দুবার জোয়ারের পানি প্লাবিত হওয়ায় বেড়ির বাইরে থাকা পরিবারগুলো রান্নাবান্না করতে না পেরে অর্ধহারে-অনাহার মানবেতর জীবনযাপন পার করছে। 

তবে দুইদিন ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে পানিবন্দি মানুষদের সহযোগিতা করা হয়নি বলে অভিযোগ জোয়ারে প্লাবিত নিম্নাঞ্চলসহ বেড়িবাঁধের বাইরের এলাকার পরিবারগুলোর। 

চরপাতিলার গ্রামের মো.নোমান বলেন, দু-দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছি। দিনে-রাতে দুবার জোয়ারের পানি ওঠে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চৌকিতে বসে রাত পার করতে হয়। 

চর মানিকা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের বাহিরের মো. জাকির হোসেন, সিদ্দিক, ও কবির বলেন,দু- দিন ধরে জোয়ারের পানিতে বসতঘর ডুবে রয়েছে। শিশুসহ গবাদিপশু নিয়ে খুব বিপদে রয়েছি। গরু, ছাগল কোনো মতে ঘরের মধ্যে বেঁধে রেখেছি। আবার অনেকের হাঁস, মুরগি, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। দিনের তুলনা রাতে জোয়ার বেড়ে যায়। এতে পরিবার নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। জোয়ারের পানি বেড়ে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। পানির কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছি না। আমাদের এখানে বেড়িবাঁধ না থাকায় নদীর পানি খুব দ্রুত প্রবেশ করে এসব এলাকায়, বেড়িবাধ নির্মাণের দাবি জানান তারা। 

চরফ্যাশন পানি উন্নয়ন বোর্ড (ডিভিশন-২) নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানান, বেড়িবাঁধের বাহিরে পানি প্রবেশ করলে আমাদের কোনো ধরনের ভূমিকা নাই,তবে বেড়িবাঁধের ভিতরে পানি প্রবেশ করলে দেখবাল করা হবে বলে জানান। 

চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নোমান রাহুল বলেন, মূলত পূর্ণিমার কারণেই নদ নদী পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত চরাঞ্চলসহ নদীসংলগ্ন এলাকাগুলোর খোঁজখবর নিয়ে তালিকা করা হবে। এবং যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষী পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি।
 


এএজে
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন