জোয়ারের পানিতে প্লাবিত পিরোজপুরের নিম্নাঞ্চল

বঙ্গোপসাগরে বিদ্যমান লঘুচাপের কারণে দক্ষিণাঞ্চলের ওপর সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে পিরোজপুর জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে জেলা, উপজেলা শহরে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
কয়েকদিনের টানা বর্ষণে আর জোয়ারের চাপে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক জানিয়েছে, ভোগান্তিতে থাকা মানুষের খাদ্যের অভাব হলে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছানোর নির্দেশনা দেওয়া আছে।
এদিকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খবর নিয়ে জানা গেছে, কয়েকদিনের বৈরী আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষক ও মাছ চাষিরা। অনেকের ঘের ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে। ফসলের মাঠ ডুবে গেছে উচ্চ জোয়ারের প্লাবনে।
পিরোজপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা আব্বাস মোল্লা বলেন, একটু পানি বাড়লেই পিরোজপুরের অধিকাংশ এলাকা ডুবে যায়। আমরা যারা খেটে খাই তারা বন্দি হয়ে পড়ি। আমাদের শহর রক্ষা বাঁধ আরও উচু করা উচিত।
ইন্দুরকানী উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, আমনের বিজতলা ও ইরি ধানের ক্ষেত ডুবে সব নষ্ট হচ্ছে। হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় আমার মাছের ঘেরের সব মাছ বের হয়ে গেছে। এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব না। রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা সুফিয়া বেগম জানান, বাড়িতে পানি উঠে তলিয়ে গেছে। ভয়ে রাতে ঘরে ঘুমাতে পারি না।
মঠবাড়িয়া উপজেলার বড়মাছুয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান কাইয়ুম হাওলাদার বলেন, মঠবাড়িয়া উপজেলার বড় মাছুয়া ইউনিয়নের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। বেড়িবাঁধের বেশ কিছু অংশ ভেঙে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক ডা. নজরুল ইসলাম শিকদার জানান, পানি স্থায়ী হলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পানি উঠে আবার নেমে গেলে তাতে ফসলে তেমন ক্ষতি হয় না। ক্ষতিগ্রস্থরা আমাদের কাছে তাদের ক্ষতির ব্যাপারে জানালে আমরা তাদের জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
জেলা মৎস্য অফিসার আব্দুল বারী জানান, জেলেদের ঘের ক্ষতির খবর পাইনি। খোঁজ-খবর নিচ্ছি। কারো ক্ষতি হলে তারা যেন আমাদের কাছে আবেদন করে। তাহলে আমরা ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠাব।
জেলা প্রশাসক মো. জাহেদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, পানিতে জেলায় এখনো বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টিপাতের কারণে পানির চাপ বেড়েছে। পানি উঠে নেমে যাচ্ছে। এ কারণে স্থায়ী ক্ষতি হচ্ছে না। কোথাও ক্ষয়-ক্ষতির খবর জানতে পারলে দ্রুত জরুরি খাদ্য সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা আছে।
এসএমএইচ