জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে আমন চাষে দ্বিগুন খরচে দুর্শ্চিন্তায় কৃষক
.jpg)
পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় বর্তমানে আমন ধান চাষের ভরা মৌসুম চলছে। তবে অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি , তেলের মূল্য বৃদ্ধি, শ্রমিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি সব মিলিয়ে দুর্শ্চিন্তায় আছে কৃষকরা। তাঁর উপর চাষাবাদে অনেক কৃষকই ক্ষুদ্র্ঋন, অধীক মুনাফায় (সুধে) টাকা আনা, বিবিন্ন এনজিওর ঋন সহ নানা মানুষিক দুশ্চিন্তায় কৃষকরা। গত কয়েকদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষক, জমির মালিক,কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাথে পৃথক আলাপে জানাগেছে, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে স্থানীয় মাপের এক বিঘা (৬৩শতাংস)জমি চাষ, ধানের চারা রোপন করতে খরচ পরবে ১১হাজার থেকে সারে ১১হাজার টাকা পর্যন্ত।
যা গত বছর ছিল সারে আট হাজার থেকে ৯হাজার টাকা পর্যন্ত। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষক রমিজ উদ্দিন, আসগর আলী, পবীত্র হালদার সহ বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, পূর্বে গরু, মহিষ এবং লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষাবাদ করা হত। পরবর্তীতে আধুনিক যন্ত্রপাতি অর্থাৎ ডিজেল চালিত মেশিনে চাষাবাদ শুরুর পর থেকে গত বছরও কৃষকের সাধ্যের মধ্যে ছিল চাষাবাদ। এবছর তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে গত বছরের চেয়ে দের থেকে দুই গুন টাকা বেশি লাগবে এ বিঘা জমির ধান ঘরে আনতে।
উপজেলা কৃষিসম্প্রসারণ বিভাগসূত্রে জানাগেছে, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে এক বিঘা জমি চাষে কৃষকদের প্রায় ৫০% বেশি টাকা গুনতে হবে। কারন সেচ খরচ,কৃষিপন্য পরিবহন খরচ প্রায় ৫০%,চাষাবাদে ৪০% ,শ্রমিকের মজুরী, বীজের মূল্য বৃদ্ধি সহ সব মিলিয়ে প্রতি কৃষকের বিঘা প্রতি ৩/৪হাজার টাকা খরচ বৃদ্ধি পাবে। যদি দ্রব্যমূল্যে উর্দ্ধগতি মানুষের আয়ের সাথে সমন্বয় রাখা যায় তা হলে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ পাওয়া সম্ভব বলেও মন্তব্য তাদের।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দল্লাহ আল মামুন জানান, এ উপজেলায় কৃষকের সংখ্যা ২৫হাজার ২শজন। আমান চাষ করা হবে ১০হাজার ২০০হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ধান ৩১হাজার মে.টন এবং চাল ২০হাজার ৫০০মেট্রিকটন। যদি প্রকৃতির বিরুপ প্রভাব না পড়ে তা হলে এ লক্ষ্য মাত্র পুরণ হবে বলেও তিনি জানান। পাশাপাশি ২০২১-’২২অর্থবছরে তাদের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১০হাজার ২০০হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদন ৩০হাজার মে.টন,চাল ২০হাজার মে.ট। অর্জন হয়েছিল ধান ২৮হাজার ৪৪০মেট্রিকটন, চাল ১৮হাজার ৬৯০মেট্রিকটন। তাতে কৃষকের আয় ব্যায়ের মধ্যে তেমন ফারাক ছিলনা। কিন্তু এ বছর তেলের মূল্য বৃদ্ধিসহ আনুসাঙ্গিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষকের আয় ব্যায়ের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু ধান চাষই নয় ডাল, গম, ভূট্রা, আলু, পান, আখ, মাল্টা, তরমুজ, ফুট, ক্ষিরাই, চিনা বাদাম, সূর্যমুখী, তিল, হলুদ, মরিচ, পিয়াজ সহ বিভিন্ন মৌসুমী ফল, সবজীর উপরও এর প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে বর্তমান সময়ে কৃষি বিভাগ সর্বাত্মক ভাবে কৃষকদের কৃষির সহজ বিষয়ে নানা ধরনের পরামর্শ প্রদান,তাদের আইসিএম, আইপিএম কৃষি ক্লাবের সদস্যদের খোঁজ খবর রাখছেন। ধান চাষের পাশাপাশি কৃষিতে সাবলম্বী করতে কৃষকদে কান্দিবের পদ্ধতিতে কিভাবে মৌসুমী সবজী চাষ বাড়ানো যায় সে সকল বিষয়েও কৃষকদের উদ্ভুদ্ধকরা হচ্ছে বলে জানান ঐ কর্মকর্তা।
এইচকেআর