ঢাকা শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম
জামিনে থাকা আসামি গ্রেফতার 

ক্ষমা প্রার্থনাকারী দুই পুলিশকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি

ক্ষমা প্রার্থনাকারী দুই পুলিশকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি
হাইকোর্ট /ফাইল ছবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

উচ্চ আদালত থেকে এক মামলায় আগাম জামিনপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষার্থী আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা চেয়েছেন পটুয়াখালী থানা পুলিশের দুই কর্মকর্তা। আদালত ক্ষমা প্রার্থনা গ্রহণ করে তাদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমান।

বাদীর আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা বলেন, এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য আরও দুই সপ্তাহ পেছানো হয়েছে। কোন নির্দিষ্ট তারিখ ঠিক করা হয়নি। আরও দুই সপ্তাহ পরে কজলিস্টে (কাযর্তালিকায়) আসলে এ বিষয়ে শুনানি হবে। রোববার কোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আশরাফুল হাওলাদারের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা। দুই পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী আবু রেজা কাইয়ুম খান, তার সঙ্গে ছিলেন শারমিনা হক। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
গত ২৪ জুলাই সকালে পুলিশের এ দুই কর্মকর্তা আদালতে হাজির হন। এর আগেই তারা আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। শুনানির সময় আদালত এ দুই কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা নিজেরা মালিক হয়ে গেছেন। 

মিটিংয়ে আছেন বলে ফোন কেটে দেন। মিটিং শেষ করেও কোনো পদক্ষেপ নেননি। এ দেশটা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছে। জামিনের পরও আসামি ধরবেন। আপনারা কি নিজেদের মালিক মনে করেন। পরে আদালত ৩০ জুলাই শুনানি ও রায়ের জন্য পরবর্তী দিন রেখেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল সেটির শুনানি হয়।

আগাম জামিনে থাকার পরও কলেজ শিক্ষার্থী আশফুল হাওলাদারকে গ্রেফতারের ঘটনা নজরে আনলে গত ২০ মে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমানকে তলব করা হয়।

জামিনে থাকার পরও উদ্দেশ্যমূলক গ্রেফতার করে দেশের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। এর আগে গত ১৮ জুন আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান ওসি মনিরুজ্জামান ও এএসআই মিজানুর রহমান।

এর আগে গত ২০ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘জামিন নেওয়া শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন ২১ মে আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা। তার পরিপ্রেক্ষিতেই ওসি-এএসআইকে তলব করা হয়।

২০ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, পটুয়াখালী সদর থানা-পুলিশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়া কলেজশিক্ষার্থী আশরাফুল হাওলাদারকে আটক করে আদালতে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতেআসামির বাড়ি থেকে আটকের পরের দিন শুক্রবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় পুলিশকে হাইকোর্টের জামিনের কপি দেখালে তা আমলে নেয়নি বলে দাবি আসামির পরিবারের।

পরিবারের অভিযোগ, আটকের পর পুলিশ মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। তা দিতে না পারায় পুলিশি ক্ষমতার বলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। যদিও হাইকোর্টের জামিননামা দেখে গত শুক্রবার দুপুরে আসামি ছেড়ে দেন পটুয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট জামাল হোসেন। আশরাফুল হাওলাদার পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের বাজারঘোনা গ্রামের আব্দুল লতিফ হাওলাদারে ছেলে। এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি।

আশরাফুলের চাচা রাজা মিয়া বলেন, সদর থানা পুলিশের এএসআই মিজানুর রহমান আশরাফুলকে গ্রেফতার করেন। আশরাফুলের পরিবার ওই রাতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আলী আহসান মোল্লার সই করা প্রত্যয়নপত্র ও জামিননামার অনলাইন কপি দেখায় পুলিশকে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

সর্বশেষ