ড. ইউনূস ইস্যুতে খোলা চিঠি প্রত্যাহার চায় সুপ্রিম কোর্ট বার


কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সুশীল সমাজের সদস্যদের খোলা চিঠিকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভা থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। গত ৩১ আগস্ট এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি জানায়, কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সুশীল সমাজের সম্মানিত সদস্য গত ২৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তারা বাংলাদেশের শ্রম আইনে ড. মুহাম্মদ ইউনুনেসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিতের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের এই চিঠি অসত্য তথ্যনির্ভর। তারা প্রকৃত সত্য জানলে এই চিঠি দিতেন না । এই চিঠি দেয়ার মধ্য দিয়ে তারা একদিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করছেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থাকে প্রভাবিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন। অন্যদিকে গরিব শ্রমিকের স্বার্থের বিরুদ্ধে তারা অবস্থান গ্রহণ করেছেন। দায়িত্ববান বিশ্বনেতাদের কাছে এটি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত।
‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের অধিকার ক্ষুণ্ন, ট্যাক্স ফাঁকি এবং অন্য যেসব বিচারিক কার্যক্রম চলমান আছে, তা আইন এবং ন্যায়বিচারের দাবি। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মনে করছে, তা যথাযথ কারণে এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের মধ্য দিয়েই চলছে। বিচার কার্যক্রমের কোনো পর্যায়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস যদি সংক্ষুব্ধ হন, তাহলে তার আইনি প্রতিকার বাংলাদেশের প্রচলিত আইনেই রয়েছে। উল্লেখ্য যে, শ্রম আইনের মামলাগুলো সরকার দায়ের করেনি, তা অধিকার বঞ্চিত শ্রমিকরাই তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য দায়ের করেছে।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি আরও জানায়, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ। বিচারকরা স্বাধীন এবং নিরপেক্ষভাবেই তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। শাসন বিভাগের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ নেই। বাংলাদেশের সংবিধান একটি মানবিক দলিল। এই সংবিধান অনুযায়ী কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং সকলেই আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। শ্রমিকরাও আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইনের ঊর্ধ্বে নন। এরূপ খোলা চিঠি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে এবং স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং গরিব মেহনতি মানুষের ন্যায্য অধিকারের পরিপন্থি। তা আন্তর্জাতিক আইনেরও পরিপন্থি। এরূপ খোলা চিঠি অনাকাঙ্ক্ষিত।
আরজেএন
