ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর ,শীতকাল হতে পারে মারাত্মক


মেগাসিটি ঢাকার বায়ুমান নিয়ে ভয়াবহ তথ্য দিল বায়ুমণ্ডলের দূষণ নিয়ে কাজ করা সংস্থা স্টামফোর্ড বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। চলতি বছর প্রথম দশ মাসে গত সাত বছরের বায়ুদূষণের মাত্রার চেয়ে ১৮ ভাগ বেশি বলে জানিয়েছে গবেষণা সংস্থাটি। এ অবস্থা চলতে থাকলে আসছে শীতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কার্তিকের শুরুতে ঢাকা শহরে আগমনী বার্তা দিচ্ছে শীত। এরইমধ্যে কমতে শুরু করেছে রাতের তাপমাত্রা। দিনের সূর্যটাও মাঝেমধ্যে তেজ হারাচ্ছে।
তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে বাতাসের আর্দ্রতা। বাতাসে উড়তে থাকা ধূলায় জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়তে থাকলে তা আর সেভাবে ওপরে উঠতে পারে না। তাই অক্টোবর থেকেই বাতাসে মিশে থাকা ধূলা বায়ুমণ্ডলের দুই থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে একটি লেয়ার তৈরি করে। ফলে কুয়াশা আর ধূলার সংমিশ্রণে একটি আস্তর তৈরি হয়, যা বায়ুর স্বাভাবিক চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে।
এমনিতেই শীতকালে বায়ুমণ্ডলের এমন সমীকরণে এই সময়ে দূষণ বাড়ে। তার ওপর চলতি বছরের পরিসংখ্যান যেনো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, আসছে বিপদ সংকেত। ক্যাপসের গবেষণা বলছে, চলতি বছর প্রথম দশ মাসেই গত সাত বছরের গড়ের চেয়ে বায়ুর মান কমেছে। আগস্টে যা ছিল সর্বোচ্চো প্রায় ৪৪ ভাগ, সেপ্টেম্বরে প্রায় সাড়ে পনেরো ভাগ।
এমন অবস্থায় সার্বিক বাস্তবতা আর অক্টোবরের বিশ দিনের বায়ুমান বিশ্লেষণ করে এবারের শুষ্ক মৌসুমে বায়ুর মান নিয়ে শঙ্কার কথাই জানিয়েছে সংস্থাটি। তারা বলছে, সেক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি।
ক্যাপসের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, "এ বছর আমরা লক্ষ্য করেছি যে, বর্ষাকালেও বায়ুর মান তুলনামূলক খারাপ অবস্থানে ছিল। গত ৭ বছর যেরকম বায়ুমান ছিল, এ বছর অক্টোবরের মাঝামাঝিতে তার চেয়ে ১০ থেকে ১২ শতাংশ বেশি বায়ুদূষণ রয়েছে"।
‘এ বছর যেহেতু অন্যান্য বছরের তুলনায় বায়ুদূষণ বেশি রয়েছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে। বিশেষ করে বায়ুদূষণের কারণে যেসব স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা হয়, সেগুলো বাড়বে’, যোগ করেন ক্যাপসের পরিচালক।
আর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছে, এমন বাস্তবতায় দীর্ঘ মেয়াদে শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীদের থাকতে হবে বেশি সতর্কে। যত্ন নিতে হবে শিশু, গর্ভবতী আর বয়স্কদের।
একদিকে দূষণ, অন্যদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকি- অথচ কর্তৃপক্ষ কতটুকুই বা প্রস্তুত! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুদূষণের মাত্রা নিরূপণ করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকিই বা কত, সেই বিষয়টি বিবেচনা করে স্বাস্থ্য অধিদফতর এখনো যদি পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে হয়ত আরও চড়া মূল্য দিতে হবে বাংলাদেশকে।
এমএন
