অবরোধের তিনদিন সব ওয়ার্ডে পাহারায় থাকবে আওয়ামী লীগ : ওবায়দুল কাদের


হরতালের মতো বিএনপির ডাকা অবরোধেও টানা তিন দিন সতর্ক পাহারায় থাকবে আওয়ামী লীগ। ভোর থেকে প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটকে রাস্তায় নামতে হবে। প্রথমে তারা মিছিল করবে। এরপর দিনভর সতর্ক পাহারা ও সমাবেশ করবে তারা। ক্ষমতাসীন দলটির নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকে নেতা-কর্মীদের প্রতি এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
আজ মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশে হামলা, গ্রেপ্তার হওয়া দলের নেতা–কর্মীদের মুক্তি এবং সরকার হটানোর এক দফা দাবিতে দলটি এই কর্মসূচি দেয়। এর আগে রোববার সারা দেশে সকাল–সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছিল বিএনপি।
গতকাল সোমবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির অবরোধে দলীয় কর্মসূচি কী হবে, তা আলোচনা করতে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মূল্যায়ন হচ্ছে, বিএনপি-জামায়াত সাম্প্রতিক কর্মসূচিতে ঢাকাকে জোর দিচ্ছে। ফলে অবরোধেও ঢাকায় ঝামেলা তৈরি করতে পারে তারা। এ জন্য ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিটি ইউনিটকে সার্বক্ষণিক তৎপর থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, অবরোধের তিন দিনই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ প্রতিটি ওয়ার্ডে মিছিল ও শান্তি সমাবেশ করবে। এসব কর্মসূচিতে মহানগরের নেতারা অংশ নেবেন। কেন্দ্রীয় নেতাদেরও মহানগরের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সারা দিনই কোনো না কোনো কেন্দ্রীয় নেতাকে থাকার কথা বলা হয়েছে।
ঢাকার বাইরে মহানগর থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলার প্রতিটি সাংগঠনিক স্তরে নেতাদেরও অবরোধের সময় রাজপথে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সভায় আলোচনা হয় যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় হরতাল-অবরোধে দিনের বেলায় তেমন বড় ঘটনা ঘটাতে পারে না বিরোধী দল। ভোরে ও সন্ধ্যার পর যানবাহনে আগুন বা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
ঢাকার বাস টার্মিনালগুলোতেও পাহারা দিতে হবে। এতে পরিবহন শ্রমিকেরা বাস চালাতে সাহস পাবেন। এই কাজে পরিবহন সমিতিগুলোর পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
জন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ভোর থেকেই মাঠে থাকার নির্দেশনা দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতাদের আলোচনায় আসে যে অনেকে দুপুরের খাবারের জন্য বাসায় চলে যান। পরে আসতে দেরি করেন, অনেকে আর ফিরে আসেনও না। সার্বক্ষণিক উপস্থিতি ঠিক রাখতে প্রতিটি জমায়েত বা পাহারার স্থানেই খাবারের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
যৌথ সভার শুরুতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির অবরোধ থেকে দেশের উন্নয়ন স্থাপনা রক্ষায় দলীয় নেতা-কর্মীদের সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। তিনি বিএনপির আন্দোলনকে ‘ভুয়া’ আখ্যায়িত করে বলেন, বিএনপির কর্মীরা আর আন্দোলন কর্মসূচিতে থাকবে না বলে পরিতাপ করছে।
এর বাইরে সারাদেশের প্রতিটি উপজেলা, থানা/পৌর এলাকা, মহানগর শাখাকে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, নাশকতা ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে দেশব্যাপী শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করতে নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
দলটির দপ্তর থেকে এমন আদেশ বিজ্ঞপ্তি আকারে দেওয়া হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৩০ অক্টোবর সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক যৌথসভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠনের জেলা/মহানগর ও উপজেলা/থানা/পৌর শাখাসমূহকে ব্যাপকভাবে এ কর্মসূচি পালনের জন্য সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
এমএন
