ঢাকা শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

চাকরি হারানোর আতঙ্কে বেসরকারি কলেজের শিক্ষকরা

চাকরি হারানোর আতঙ্কে বেসরকারি কলেজের শিক্ষকরা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

‘শিক্ষকদের বেতন নিশ্চিত না করলে বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স স্তরের অধিভুক্তি বাতিল করা হবে’— জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন নোটিশে চাকরি হারানোর আতঙ্কে রয়েছেন এই স্তরের সাড়ে চার হাজার শিক্ষক। তারা বলছেন, চাকরি না থাকলে বেতনের নিশ্চয়তা কি কাজে আসবে?

এ প্রসঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন নিশ্চিত করতে কলেজগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেসব কলেজ বেতন দেবে না, তাদের অধিভুক্তি বাতিল করা হবে। মনিটরিং করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


প্রসঙ্গত, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তির শর্তে বলা ছিল—অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের কলেজ কর্তৃপক্ষ বেতন-ভাতা পরিশোধ করবে। এরপর শর্ত মেনে কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে অনার্সের কোর্স খোলে। ফলে অধিভুক্তি না থাকলে শিক্ষকদের পদই থাকবে না।

গত ১৩ জুন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শন দফতর থেকে দেশের প্রায় সাড়ে তিনশ’ বেসরকারি কলেজকে অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের বেতন দিতে বলা হয়। শিক্ষকদের বেতন না দিলে সংশ্লিষ্ট কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করা হবে বলেও  নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়। ওই নোটিশনার পর চাকরি হারানোর আতঙ্কে পড়েন বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকরা।


জানা গেছে, বেসরকারি কলেজগুলোর অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকরা যখন বেতনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন, তখনই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় চিঠি দিয়ে কলেজগুলোকে বেতন দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু এরপরেও দফায় দফায় শিক্ষকরা আন্দোলন করলেও কলেজগুলো শিক্ষকদের বেতন দিচ্ছে না।

সাত বছর আগে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ২০১৪ সালের ২৩ মার্চ চিঠি দেয়। চিঠিতে অনার্স-মাস্টার্স স্তরে নিয়োগ দেওয়া শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির আগে শিক্ষা আইনে অন্তর্ভুক্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে মতামত চাওয়া হয়। কিন্তু গত সাত বছরেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে কোনও সুপারিশ করেনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে ২০১৬ সালে এবং করোনা মহামারি শুরুর পর ২০২০ সালে চিঠি দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বশেষ গত ১৩ জুন কলেজ কর্তৃপক্ষকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের বেতন না দিলে বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অধিভুক্তি বাতিল করবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘গত ১৩ জুন শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বেতনের দাবি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। স্মারকলিপিতে শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বেতনের দাবি জানালে ওই দিনই কলেজ কর্তৃপক্ষকে নোটিশটি জারি করা হয়। এই নোটিশের পর থেকে চাকরির আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষকরা।’


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন