ঢাকা শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

Motobad news

রমজান ঘিরে বাজারে ক্রেতাদের ভিড় পণ্যের দাম বাড়তে থাকায় অসন্তোষ

রমজান ঘিরে বাজারে ক্রেতাদের ভিড় পণ্যের দাম বাড়তে থাকায় অসন্তোষ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন


পবিত্র রমজান শুরু আগামী ১২ মার্চ। তাই রোজা শুরুর আগে গতকাল শেষ শুক্রবার বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক বেশি। তবে সব জিনিসের দাম অস্বাভাবিক হওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছেই। 


বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১০০ টাকা। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে শীতকালীন সবজিতে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও ৮০ টাকার নিচে গ্রীষ্মকালীন সবজি মিলছে না।


ক্রেতারা বলছেন, সরকারের মন্ত্রীরা রোজায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকবে বার বার আশ^াস দিলেও সবই ধোকা বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। তারা বলছেন, মন্ত্রীরা মিথ্যা আশ^াস দিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বাজারেও সবকিছুর দামই চড়া। 
অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতারা বেশি চাহিদা দেখাচ্ছে বলেই সবকিছুর দাম বাড়তি।


গতকাল শুক্রবার সকালে নগরীর চৌমাথা, নতুন বাজার, পোর্ট রোড, বাংলাবাজার ও রূপাতলী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি, যা গতসপ্তাহে ২১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। সোনালি ৩৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৩০ টাকা। দেশি মুরগি ৬০০ থেকে ৭০০ ও লেয়ার মুরগি ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানে একলাফে কাগজি  লেবুর হালি ৪০ টাকা বেড়ে ৬০ বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে এলাচি লেবুর হালিও ২০ টাকা বেড়ে গেছে। যা গত সপ্তাহে এই লেবু বিক্রি হয়েছে ২০ টাকা। করলা কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। বর্তমানে ৬০ টাকার করলা ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বেগুন ৬০ থেকে ৮০,  ঢেঁড়স ৮০, বরবটি ৬০, শসা ৫০, খিরাই ৬০, পেঁপে ৪০, চিচিঙ্গা ৪০, ঝিঙ্গা ৬০, এবং প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০  থেকে ৫০ টাকায়।
 এছাড়া প্রতি কেজি মূলা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, শিম ৩০ থেকে ৪০, পাকা টমেটো ৪০ টাকা, কাঁচা টমেটো ২৫, গাজর ৩০ থেকে ৪০, এবং প্রতিটি ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধা কপি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 


ধনে পাতা ৬০ টাকা কেজি, কলার হালি ৫০, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 
আবার রোজায় চাহিদা বেশি থাকে এমন সবজির দাম বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আলু ও সব ধরনের বেগুন। এই দুই সবজির দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৫ টাকা ও ১০ টাকা। লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, সাদা  মোঠা গোল বেগুন ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এছাড়া গতসপ্তাহের ৩০ টাকার আলু ৫ টাকা বাড়িয়ে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। 


নগরীর নতুন বাজারে বাজার করতে আসা চাকরিজীবী শাহীন হাওলাদার বলেন, সরকার বলেছিল রোজার বাজারে জিনিসপত্রের দাম কম থাকবে। সেরকম কিছু তো দেখছি না। উল্টো বেগুনের দাম বেড়ে গেছে। রোজায় চাহিদা বাড়লেই কী ব্যবসায়ীরা বেশি নেবে, ক্ষোভ নিয়ে বলেন তিনি।
বাজার করতে আসা আরেক ক্রেতা মাহামুদ হোসেন বলেন, যখন যেটা বেশি লাগে তখন সেটারই দাম বেড়ে যায়। অদ্ভুত এক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি।
এদিকে সবজি বিক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। একই বাজারের সবজি বিক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, ক্রেতারা একদিনে সব কিনতে চায়। এতে বাজারে নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। আর এটা আগে বুঝতে পেরেই জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয় পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তখন বাজারে এসে কাস্টমাররা বলেন দাম বেশি। তারা আগে-পরে কিনলেই কিন্তু এমন হয় না।


এদিকে দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা এবং ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৭০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পোর্ট রোড বাজারে আলু কিনতে আসা সাকিল হোসেন বলেন, কয়েক দিন আগেই ৪ কেজি আলু ১০০ টাকায় কিনেছি ভ্যানগাড়ি থেকে।  আজ (শুক্রবার) কিনতে হলো ৩৫ টাকা কেজি। রোজা আসতেই দাম বেড়ে গেছে।


এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এছাড়া ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা, এক কেজি শিং মাছ (চাষের, আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৫০০, পাঙ্গাস ২০০ থেকে ২২০, চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০, পোয়া মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০, তেলাপিয়া ২০০, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৪০, মলা ৪০০, কাচকি মাছ ৫০০, ষোল মাছ ৬০০ থেকে ১ হাজার দরে বিক্রি হচ্ছে।
 
 


এমএন
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন