শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট স্থানান্তরের দাবি


বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট স্থানান্তরের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) বেলা ১১ টার দিকে ভুক্তভুগি রোগীদের পক্ষে সচেতন বরিশালবাসীর ব্যানারে হাসপাতালের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের স্বজনরাও অংশগ্রহন করেন।
ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বৃহত্তর চিকিৎসা কেন্দ্র শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ এখন রোগ তৈরীর কারখানায় পরিণত হয়েছে।
গোডাউনের মত বদ্ধ কক্ষে চিকিৎসার নামে চলছে এক রকম তামাশা। শুধু যে রোগীরাই এমন পরিস্থিতির শিকার এমনটা নয়, এখানে চিকিৎসা দিতে আসা ডাক্তারও পরিণত হচ্ছেন রোগীতে। নানা রোগ ভর করছে তাদের শরীরে। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালীর কারনে আজ ভেস্তে যেতে বসেছে এ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসা ব্যবস্থা। মেডিসিন ভবনের বারান্দার মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন কয়েকশো রোগী। এককক্ষে ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী, নেই পর্যাপ্ত টয়লেট ও আলোর ব্যবস্থা।
তারা বলেন, পোকামাকড় ও দুর্গন্ধে নাকাল রোগী আর স্বজনরা। চার দেয়ালে ঘেরা ভবনের ছোট ছোট কক্ষে ঠাসাঠাসি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। মাথার ওপরে অল্প গতিতে ঘুরছে ফ্যান। নষ্ট হয়ে আছে এসিগুলো। বাতি নেভাতেই ভেতরটা যেন পতিত হয় ঘুটঘুটে আন্ধকারে। দেখলে মনে হয় যেন মানুষের গোডাউন। যেখানে প্রচণ্ড গরমে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস না থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সাথে দম বন্ধ হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন স্বজনরাও। ভেতরের কক্ষগুলো খুবই ছোট। তার মধ্যেই ৬-৮টি করে শয্যা। প্রতিটি শয্যায় রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে মাঝের অংশের কক্ষগুলোতে নেই আলো-বাতাস প্রবেশের পথ। ফ্যান ঘুরলেও বাতাস পৌঁছাচ্ছে না রোগীদের গায়ে। তাই স্বজনরা বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ছোট ছোট ফ্যান এবং হাত পাখা দিয়ে শীতল পরশ নেয়ার চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডেই আছে তেলাপোকার মতো এক ধরনের ছোট ছোট পোকা। অন্যদিকে এই বিভাগে প্রয়োজনের তুলনায় বাথরুমের সংখ্যাও কম। যাও আছে, তার মধ্যে দুর্গন্ধে যে কেউ গেলে অসুস্থ হওয়ার পালা। অনেক সময় পানির কল নষ্ট থাকায় বাথরুম থেকে অনর্গল পানি পড়তে থাকে। যা বাথরুম উপচিয়ে রুমের ভিতর চলে আসে।
বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে যে ভবনে মেডিসিন ইউনিট রয়েছে সেটি মুলত ওটি কমপ্লেক্স। এখানে হওয়ার কথাছিলো বিভিন্ন ইউনিটের ওটি ও প্রশাসনিক কার্যালয়। অথচ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ও কয়েক চিকিৎসকের হটকারি সিদ্ধান্তে পুরাতন ভবন থেকে এখানে মেডিসিন ইউনিট স্থানান্তর করা হয়। গোডাউন সদৃশ এই ভবনটি এখন মেডিসিন রোগী ও চিকিৎসকদের গলার কাটা হয়ে দ্বারিয়েছে। রোগীদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য উপযোগী নয় মেডিসিন ভবন।
তাই আগে গাদাগাদি করে হলেও ভালো ছিল মূল ভবনের মেডিসিন ইউনিট, যেখানে বিদ্যুৎ না থাকলেও আলো-বাতাস চলাচল ছিল। তাই মেডিসিন ইউনিট চিকিৎসার স্বার্থে পুরাতন ভবনে স্থানান্তর করা হোক। আর যদি না করা হয় তবে বরিশালবাসী বড় কর্মসূচি গ্রহণ করবে বলে হুশিয়ারী দেন বক্তারা।
এইচকেআর
