ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম

বিচারককে ঘুষ দিতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন পিপি

বিচারককে ঘুষ দিতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন পিপি
ছবি: সংগৃহীত 
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পটুয়াখালীতে একটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামিকে জামিন দেওয়ার জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নীলুফার শিরিনকে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টায় ধরা পড়েছেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. রুহুল আমিন সিকদার। এ ঘটনার পরপরই জেলা আইনজীবী সমিতি তার প্রাথমিক সদস্য পদ স্থগিত করেছে।


গতকাল বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে আসামির জামিনের জন্য বিচারকের বাসায় ৫০ হাজার টাকার একটি খাম ও মামলার নথিপত্র পাঠান ট্রাইব্যুনালের পিপি রুহুল আমিন সিকদার। এ ঘটনার পর বিচারক ঢাকা বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে জরুরি সভার আয়োজন করে জেলা আইনজীবী সমিতি। সভায় সকলের সম্মতিক্রমে রুহুল আমিনের প্রাথমিক সদস্য পদ স্থগিত করা হয় এবং তাকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

বিচারক লিখিত অভিযোগে জানান, এর আগেও পিপি রুহুল আমিন এই মামলায় দুই নম্বর আসামি মো. শাহাবুদ্দিন মুন্সীর (৫৫)  জামিনের জন্য তার কাছে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তিনি কোনো উত্তর না দিলেও সরাসরি বাসায় ঘুষ পাঠানোয় তিনি অপমানিত বোধ করেছেন ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। 

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, রুহুল আমিন পূর্বেও বিভিন্ন মামলায় আসামিপক্ষের হয়ে তদবির করেছেন এবং আদালতের আদেশ মনমতো না হলে সাংবাদিক ডেকে আনেন। জেলার আলোচিত জুলাই শহীদের কন্যাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলাতেও তিনি আসামিপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের রেখে তদবির করেছেন। 

অভিযোগের অনুলিপি আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ও পটুয়াখালী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর বরাবর পাঠনো হয়েছে।

এ ঘটনার পর জেলা আইনজীবী সমিতি জরুরি সভা ডেকে তার প্রাথমিক সদস্য পদ স্থগিত করার পাশাপাশি সাত কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে কারণ দর্শনের নোটিশ দিয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে আইনজীবী সমিতি।

তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন সিকদার সাংবাদিকদের বলেন, আমি পাবলিক প্রসিকিউটর হওয়ার পরই আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার এমন ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। 

এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বলেন, পটুয়াখালীর ঐতিহ্যবাহী জেলা আইনজীবী সমিতি কখনো ঘুষ, দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতি প্রশ্রয় দেয় না। তাই অভিযোগের পরেই একটি জরুরি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সবার সম্মতিক্রমে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ সাময়িক স্থগিত করা হয় এবং সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর এটি নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। 

তার লিখিত উত্তরপত্রসহ রেজুলেশনের কপি জেলা প্রশাসক, দুদক অফিস, আইন মন্ত্রণালয় এবং প্রধান বিচারপতির কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হবে। 

প্রসঙ্গত, অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন সিকদার জামায়াতে ইসলামী পটুয়াখালী জেলার রোকন। তিনি ২০২৫ সালে জামায়াতে ইসলামীর প্যানেল থেকে জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

জেলা জামায়াতে ইসলামের সাবেক সেক্রেটারি এবং বর্তমান শুরা সদস্য এবিএম সাইফুল্লাহ বলেন, আমরা কিছুক্ষণ আগে বিষয়টা জেনেছি। আজ বিকেলে সবাই একত্রে বসবো, সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যদি এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেহেতু বিস্তারিত জানি না, তাই এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

সর্বশেষ