বরিশালে জমি দখলের অভিযোগে আ’লীগ নেতাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা


বরিশাল সদর উপজেলার কর্নকাঠী এলাকায় এক ব্যবসায়ী দম্পত্তি ও চিকিৎসকের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে ফ্যাসিস্ট পলাতক সরকারের দোসর চরকাউয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান সোহাগ চৌকিদারের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বরিশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সাফানা জামান লাকি (৪৪) বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তিনি সদর উপজেলার কর্নকাঠি এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম খানের স্ত্রী। মামলায় নামধারী ৫ অজ্ঞাতনাম ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে কারন দর্শানো নোটিশ জারি করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাদী আইনজীবী ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি জানান, মামলার পরবর্তী তারিখে বিবাদীদের কারন দর্শানো নোটিশের জবাব দিতে বলেছেন আদালত।
মামলার নামধারী বিবাদীরা হলেন, কর্নকাঠী এলাকার বাসিন্দা মৃত খলিল চৌকিদারের ছেলে ও চরকাউয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান সোহাগ চৌকিদার (৪০), সোবাহান হাওলাদারের ছেলে আকিব হাওলাদার (২৮), মৃত ওয়াদুদ সিকদারের ছেলে সামন সিকদার, ফরিদুল ইসলাম ও বরিশাল ইসলামী ব্যাংকের অফিসার শামিন হোসেন খান (৩৫)।
এর আগে বরিশাল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে গত ১১ সেপ্টেম্বর একই অভিযোগে ঐ এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাদের মোল্লার ছেলে ডা. মিজানুর রহমান মোল্লা। মামলায় একমাত্র ফরিদুল ইসলামকে বিবাদী করা হয়েছে।
সাফানা জামান লাকি (বাদী) তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, জেএল ৫৭ নং কর্নকাঠী মৌজার এসএ ১১৫৩ নং খতিয়ানে ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি শফিকুল ইসলাম খানের কাছ থেকে সাবকবলা দলিলমূলে ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। পরবর্তীতে ঐ জমিতে বাউন্ডারি ও সাইনর্বোড দিয়ে ভোগদখল করে আসছেন। সোহাগ চৌকিদারসহ অন্যান্য বিবাদীরা তার জমি দখল করে রেখেছে। তাদের ভয়ে ভোগদখলীয় জমিতে প্রবেশ করতে পারছে না বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
এদিকে ডা. মিজানুর রহমান মোল্লা বলেন, জেএল ৫৭ নং কর্নকাঠী মৌজার এসএ ১১৫৩ নং খতিয়ানে তিনি ৫ শতক জমি ক্রয় করে বাউন্ডারি ও সাইনর্বোড দিয়ে ভোগদখলে আছেন। গত ১ লা সেপ্টেম্বর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিবাদী তার সহয়োগীদের নিয়ে তার জমিতে সাইবোর্ড টাঙিয়ে দেয়। এসময় তাদের বাধা দিলে তারা হুমকি দিয়ে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পালালেও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সাথে সখ্যতা রেখে কামরুজ্জামান সোহাগ চৌকিদার তার দখল বাণিজ্য অব্যহুত রেখেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমল থেকেই ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের কর্নকাঠী এলাকায় ৩১ শতক জমি দখল করে রাখাসহ ক্ষমতা দেখিয়ে স্থাণীয়ভাবে নানা অপরাধকর্মকান্ড করার অভিযোগ রয়েছে সোহাগ চৌকিদারের বিরুদ্ধে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কামরুজ্জামান সোহাগ চৌকিদার গত বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে বলেন, তিনি কোন রাজনিতির সাথে জড়িত না। ফরিদুল ইসলামের কাছে তিনি কোন জমি বিক্রি করেন নি। তবে নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির কাছে জমি বিক্রি করেছি। তার কাগজ পত্র আছে। মামলা হলে পাল্টা মামলা দেয়া যায়। আপনি নিউজ লেখেন।
তবে স্থানীয় রাহাত তালুকদার নামে এক ব্যক্তি প্রতিবেদককে মুঠোফোনে কামরুজ্জামান সোহাগ চৌকিদার চরকাউয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন জানিয়েছে বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে দু পক্ষের সাথে কথা বলেছি। পুলিশ এসেছিল। এ সপ্তাহে বসার কথা। এর ভিতরে আবার মামলা করা হয়েছে। তাতে কি সমাধান হবে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার এএসআই (মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৩ সেপ্টেম্বর আদালতের নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়ে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বলেছি। দু পক্ষই বসার কথা রয়েছে। কিন্তু এখনো তারা বসেনি।
এইচকেআর
