ঢাকা শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

Motobad news

অচেতন অবস্থায় উদ্ধার সাজিদকে হাসপাতালে মৃত ঘোষণা

অচেতন অবস্থায় উদ্ধার সাজিদকে হাসপাতালে মৃত ঘোষণা
ইনসেটে শিশু সাজিদ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের পাইপ থেকে শিশু সাজিদকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের পর তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন চিকিৎসক।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৫০ মিনিটে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

রাত ১০টায় বিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক অপারেশন লেফটেন্যাল কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, আমরা বাচ্চাটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেছি। এরপর তাকে হাসপাতলে দ্রুত নিয়ে আসা হয়। সেখানে পরীক্ষা- নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোঘণা করেন চিকিৎসক।

এর আগে রাত ৮টা ৫০ মিনিটে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে নেওয়া তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তার আগে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে গভীর নলকূপের ওই পাইপে পড়ে যায় শিশুটি।

স্থানীয়রা জানান, কোয়েলহাট গ্রামের মাঠের পাশ দিয়ে মায়ের সঙ্গে হাঁটার সময় অসাবধানবশত পরিত্যক্ত নলকূপের গর্তে পড়ে যায় সাজিদ। মায়ের আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে প্রথমে উদ্ধার চেষ্টা চালালেও ব্যর্থ হলে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে তিনটি ইউনিট এসে তাৎক্ষণিক উদ্ধার অভিযান শুরু করে।

ফায়ার সার্ভিস প্রথম পর্যায়ে চার্জ ভিশন ক্যামেরা দিয়ে প্রায় ৩৫ ফুট পর্যন্ত অনুসন্ধান চালায়। তবে শিশুর অবস্থান শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়। এরপর পাশেই এস্কেভেটর দিয়ে রাতভর প্রায় ৩৫ ফুট গভীর বড় একটি গর্ত খনন করা হয়। সকালে সেই গর্ত থেকে নলকূপের দিকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার চেষ্টা করা হলেও সেখানেও শিশুর অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি। এরপর আবারও পরিত্যক্ত নলকূপে ক্যামেরা নামানো হলে সেটিতে মাটি ছাড়া আর কিছু দেখা যায়নি। এরপর নতুন করে আবারও খননের সিদ্ধান্ত নেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছরখানেক আগে জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ওই নলকূপ খোঁড়া হয়েছিল। পানি না ওঠায় মালিক সেটি মাটি দিয়ে ঢেকে রাখেন। সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে মাটি ধসে পড়ে নলকূপের মুখ আবারও উন্মুক্ত হয়ে যায়। সেই গর্তেই দুর্ঘটনাবশত পড়ে যায় শিশু সাজিদ।

শিশুটির মা রুনা খাতুন জানান, বুধবার দুপুর ১টার দিকে মেজো ছেলে সাজিদের হাত ধরে তিনি বাড়ির পাশের মাঠে যাচ্ছিলেন। এসময় তার ছোট একটি সন্তান কোলে ছিল। হাঁটার সময় হঠাৎ সাজিদ ‘মা’ বলে ডেকে ওঠে। পেছনে তাকিয়ে দেখেন, ছেলে নেই, গর্তের ভেতর থেকে ‘মা, মা’ বলে ডাকছে।

গর্তটির ওপরে খড় বিছানো ছিল। ওখানে যে গর্ত ছিল, সেটা বুঝতে পারেননি তিনি নিজে কিংবা শিশু সাজিদ। ওই জায়গায় পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুটি গর্তের ভেতর পড়ে যায়। লোকজন ডাকাডাকি করতে করতেই গর্তের তলায় চলে যায়।

শিশু সাজিদরা তিন ভাই। বড় ভাই সাদমান স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ভাই সাব্বিরের বয়স মাত্র তিন মাস। বাবা রাকিব গাজীপুরে একটি ঝুট কারখানায় কাজ করেন।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন