হাদির ওপর হামলায় সন্দেহভাজন দুজনের পাসপোর্ট ব্লক, আটক ৩

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজনদের পাসপোর্ট ব্লক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। একই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
আটকরা হলেন—সিবিয়ন দিও ও সঞ্জয় চিসিম। এছাড়া র্যাব পৃথক অভিযানে সন্দেহভাজন মো. আব্দুল হান্নানকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করেছে। এসময় হামলায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়।
পুলিশের দাবি, শেরপুর থেকে আটক দুজন (সিবিয়ন দিও ও সঞ্জয় চিসিম) সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অবৈধপথে লোক পারাপার চক্রের সদস্য। তারা হাদির ওপর হামলাকারী ব্যক্তিকে সীমান্ত দিয়ে পার করতে পারে—এমন সন্দেহে তাদের আটক করে নিয়ে আসা হয়েছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এস এন নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুর আনুমানিক ২টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর পল্টন বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেলযোগে আসা দুর্বৃত্তরা খুব কাছ থেকে গুলি চালিয়ে ওসমান হাদিকে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি বর্তমানে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পরপরই তদন্তে নামে পুলিশ। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে দুজন সন্দেহভাজনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়।
তারা হলেন—ফয়সল করিম মাসুদ ও মো. আলমগীর শেখ। সন্দেহভাজন এ দুজন দেশত্যাগ করতে না পারে, সেজন্য তাদের পাসপোর্ট ব্লক করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এ হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী এলাকায় সীমান্ত দিয়ে লোক পারাপার চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও মূল হামলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় কোনো তথ্য থাকলে নিকটস্থ থানা অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে জানানোর জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এছাড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) জানানো হয়েছে, কোনোভাবেই যেন সন্ত্রাসীরা দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে।
সিসিটিভি ফুটেজে যে দুই আসামিকে দেখা গেছে, তারা দেশে আছে নাকি বিদেশে পালিয়ে গেছে—এমন প্রশ্নে নজরুল ইসলাম বলেন, দেশের বাইরে চলে যাওয়ার কোনো তথ্য নেই। ওসমান হাদিকে ফয়সাল মোটরসাইকেলের পেছনে বসে গুলি চালায় এবং আলমগীর মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিল। সর্বশেষ পুলিশের কাছে যে তথ্য রয়েছে, ফয়সাল গত জুলাইয়ে থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আসে।
এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে কি না—জানতে চাইলে ডিএমপির এ কর্মকর্তা বলেন, মামলা এখনো হয়নি। হাদির পরিবার হাসপাতালে ব্যস্ত। আমরা চাইছি পুলিশ বাদী না হয়ে হাদির পরিবার বাদী হয়ে মামলাটা করুক। যদি তারা না আসতে পারে সেক্ষেত্রে ড্রাফট করে রাখা হয়েছে, হাসপাতালে নিয়ে পরিবারের সই করিয়ে আনা হবে।
এইচকেআর