যে গ্রামে অভিযান চালালেই শিকার হতে হয় হামলার!


বাংলাদেশের কোথাও নারী ছিনতাইকারী ধরা পড়লেই উঠে আসে ধরমন্ডল গ্রামের নাম। ওই গ্রামের হাজারো নারী দেশের বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিনতাইকাজে জড়িত। মূলত গ্রামটির বেশির ভাগ নারীর পেশাই হচ্ছে ছিনতাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল ইউনিয়নের সেই 'আলোচিত' ধরমন্ডল গ্রামে মাদকেরও ছড়াছড়ি। র্যাবের পক্ষ থেকে সেখানে অভিযান চালাতে গিয়ে হামলার শিকার হতে হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটলেও শুক্রবার রাতে মামলা হওয়ার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
হামলায় র্যাবের দুই সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় ধরমন্ডল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. বাহার উদ্দিনসহ ২১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন। উদ্ধার করা হয়েছে মাদক, দেশীয় অস্ত্র ও মাদক বিক্রির টাকা।
থানায় দায়ের করা মামলা ও র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, মাদক কেনা-বেচার খবর পেয়ে র্যাব-৯ এর হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ধরমন্ডল গ্রামের ঠাকুরবাড়ি এলাকার আব্দুল হকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় আবু মিয়া (২৭), বাহার মিয়া (২৮) ও সাত্তার মিয়া (৩২) নামে তিনজনকে আটক করা গেলেও বাকিরা পালিয়ে যায়। আটককৃতদের কাছ থেকে ১০০ গ্রাম হেরোইন, ২৩৫ পিস ইয়াবা, নগদ দুই লাখ ৮১ হাজার ১৭০ টাকা উদ্ধার করা হয়। আটককৃতদের নিয়ে যাওয়ার পথে র্যাবের ওপর হামলা হয়।
হামলায় এএসআই মো. বকুল হোসেন ও নায়েক মো. তৌহিদুল ইসলাম আহত হন। এসময় আত্মরক্ষার্থে ২১ রাউন্ড পিস্তল ও ১১ রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে র্যাব। এ ঘটনায় র্যাবের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল হান্নান বাদী হয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ ২১ জনের নাম উল্লেখ করে শুক্রবার রাতে নাসিরনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।
নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল গ্রামটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সড়কপথে নাসিরনগর সদর হয়ে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার প্রায় ১০ কিলোমিটার পথে পেরিয়ে যেতে হয় ধরমন্ডল গ্রামে। এ গ্রামে অভিযান চালাতে গিয়ে একাধিকবার পুলিশও হামলার শিকার হয়।
বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম গ্রাম ধরমন্ডলে প্রায় ২০ হাজার লোকের বসবাস। ধর ও মন্ডল নামে দুই ব্যক্তির নামানুসারে গ্রামটির নামকরণ হয় বলে আলোচনা আছে। গত বছরের জুন মাসে এ প্রতিবেদক সেখানে গিয়ে নারী ছিনতাইকারী সম্পর্কে খোঁজ নেয়। তখন বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। ওই গ্রামের হাজারো নারী ছিনতাইকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। এ নিয়ে কালের কণ্ঠে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এমবি
