নাসা'র নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা!


পুরাতন ব্রিটিশ ধাতব মুদ্রা বা কয়েন সংগ্রহ ও তৈরি করে বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষদের প্রতারিত করে আসছে একটি চক্র। এই চক্রের টার্গেট সমাজের ধনী ও সাধারণ জনগণ।
প্রতারকরা অপপ্রচার করে বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ এই মুদ্রা ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি ব্রিটিশ আমলে বাংলাদেশে বিভিন্ন সীমানা পিলারের মধ্যে পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক মার্কেটে এই ম্যাগনেটিক মুদ্রার মূল্য কোটি কোটি টাকা। আমেরিকার নাসা এই মুদ্রার প্রধান ক্রেতা।
এমন অপপ্রচারে তাদের খপ্পরে পড়ে অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন। হয়েছেন অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বিষয়টি বগুড়া র্যাব ক্যাম্পের গোয়েন্দা দলের নজরে আসে। তারা ধাতব মুদ্রা প্রতারক চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করার জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে।
অবশেষে র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার হন প্রতারক চক্রের এক সদস্য শাহীন ইমরান আলী (৫০)। শনিবার রাত ১১টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলার শাপলা সুপার মার্কেট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ৫৫টি পুরাতন ব্রিটিশ ধাতব মুদ্রা, মুদ্রা তৈরির ছাচ, মোবাইল এবং নগদ ৩০ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করা হয়। বগুড়া র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার (লেফটেন্যান্ট কমান্ডার) আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার শাহীন ইমরান আলী বগুড়া সদর উপজেলার বিহারী কলোনী (লতিফপুর) এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম মৃত আব্দুস সাত্তার।
র্যাব জানায়, শাহীন ইমরান আলী কম মূল্যে ভাংড়ির দোকানসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েন সংগ্রহ করতেন। পরে মুদ্রাগুলো কেমিক্যাল দিয়ে বিভিন্ন ছাপ দিয়ে শুকানোর জন্য রোদে রাখতেন। পরে এসব আগুনে পুড়িয়ে এসিড দিয়ে নিমজ্জিত রেখে ধাতব মুদ্রা তৈরি করতেন। তৈরি করা ধাতব মুদ্রাগুলো অপপ্রচার চালিয়ে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি।
র্যাব আরো জানায়, প্রতারক চক্রে সদস্যরা অপপ্রচার করে বলেন, 'এই ধাতব মুদ্রা যদি জাহাজে রাখা হয় তাহলে জাহাজ পানিতে ডুবে না, এটা দিয়ে বিমানকে নামিয়ে আনা যায়, যত বেশি এই মুদ্রা পানিতে ভেসে থাকবে তত বেশি দাম হবে। এসব নাসার স্যাটালাইটের কাজে লাগে।' এসব নেশায় বগুড়াসহ দেশের অনেক মানুষ তাদের প্রতারণার খপ্পরে পড়ে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এমনকি সাধারণ মানুষরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরে টাকা ফিরে পাওয়ায় জন্য তারাও এক পর্যায়ে এ চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
র্যাব কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া শাহীন ইমরান আলী দীর্ঘদিন ধরে ধাতব মুদ্রা তৈরি করেন। পরে প্রতারক চক্রের মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে অপপ্রচার করে এসব মুদ্রা বিক্রি করেন। শাহীন তার নিজ এলাকায় প্রতারক বলে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে তার এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে। তাকে বগুড়া সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এমবি
