ঢাকা শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

দোকানে দোকানে পণ্য সরবরাহ করছেন করোনা রোগী

দোকানে দোকানে পণ্য সরবরাহ করছেন করোনা রোগী
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ভারত ঘেঁষা দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় দিনদিন বাড়ছে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। কিন্তু আক্রান্ত রোগীদের চিহিৃত না করায় অবাদে হাট-বাজারসহ পাড়া মহল্লায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঠিক তেমনি  বুধবার ফুলবাড়ী পৌরশহরে এক করোনা রোগীকে দেখা গেছে দোকানে দোকানে খাদ্যপণ্য দিয়ে ফিরতে। জানা যায় তার পরিচয়। নাম ফরহাদ হোসেন (২৮)। তিনি তাহমিদ এন্টারপ্রাইজের প্রাণ গ্রুপের পণ্যের সেলস্ম্যান। তার বাড়ী পৌরএলাকার চকচকা গ্রামে। তিনি গত ২৮ জুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র‌্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষা করিয়ে করোনা শনাক্ত হন। তবে তিনি বিষয়টি গোপন করেছেন। জানেন না তার প্রতিবেশি।

এমনকি জানেন না যে প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন তার সত্ত্বাধিকারী বা সহকর্র্মীরা। তিনি পাড়া-মহল্লাসহ হাটবাজারে ঘুরছেন দেদারসে। এছাড়াও তিনি পিকআপে বিভিন্ন খাবারের পণ্য নিয়ে ছুটছেন ভিন্ন দোকানে দোকানে।  অন্যান্য জেলা-উপজেলায় করোনা রোগীদের বাসা-বাড়ীতে লাল ঝান্ডা লাগিয়ে মানুষকে সতর্ক করা হলেও ফুলবাড়ীর চিত্র ভিন্ন। বিষয়টি নিয়ে শহরজুড়ে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক উৎকন্ঠা। প্রশ্ন উঠেছে, নিরাপত্তা ও সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থাপনা নিয়ে।

জানা যায়, ফুলবাড়ীতে মানুষ অবাদে চারিপাশে চলাফেরা করে অসুস্থ হচ্ছেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গেলেই করতে হচ্ছে করোনা পরীক্ষা। করোনা পরীক্ষা করলেই ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষেরই করোনা শনাক্ত হচ্ছে। তারপর সেইসব রোগীদের মুঠোফোনে এসএসএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে তিনি করোনা পজেটিভ। কিন্তু অনেক অসচেতন ব্যক্তি সেই রিপোর্টকে আমলে না নিয়েই দেদারসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সবখানে। চায়ের দোকানে কিংবা হাট-বাজারের ভিড়ে দেখা মিলছে সেসব করোনা পজেটিভ রোগীদের। এমনকি ওইসব রোগীর প্রতিবেশিরা জানছেন না যে তারা করোনা পজেটিভ। প্রতিবেশিরাও মেলামেশা করছে অজান্তেই। এভাবে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে দিনদিন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যাচ্ছে অমুক করোনা পজেটিভ। দেদারসে বাড়ির আশপাশসহ হাট-বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওইসব করোনা পজেটিভ ব্যক্তিরা। অনেকেই আবার আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গেও দেখা করছেন। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে কোনপ্রকার প্রমাণ না থাকায় কিছু বলতেও পারছেন না তারা। তারা বলেন, শুরুতে করোনা রোগীদের বাড়িতে লাল পতাকা লাগিয়ে সতর্ক করা হচ্ছিল। কিন্তু করোনা এখন প্রকোপ আকার ধারণ করেছে কিন্তু সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতার কারণে সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে। তারা যদি করোনা পজেটিভ ব্যক্তিদের বাড়িতে লাল পতাকা ঝুলিয়ে দেয়া হয় তবে প্রতিবেশিসহ সকলে সতর্ক থাকবেন।
করোনা শনাক্ত রোগী ফরহাদ হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, করোনা পজেটিভ হওয়া ২০-২৫ দিন হয়ে গেছে। এখন আমি সুস্থ বলেই পালিয়ে যান।
    তাহমিদ এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারীর বড়ভাই কলেজ লাইব্রেরীর সত্ত্বাধিকারী দারুল ইসলাম জানান, ফারহাদ হোসেন প্রাণ গ্রুপের সেল্সম্যান। সে তাহমিদ এন্টারপ্রাইজের প্রাণ গ্রুপের পণ্যের সেলস্ম্যান। তার করোনা পজেটিভ এসেছে সে বিষয়টি সে আজো কাউকে জানায় নি। সে করোনা নিয়েই দোকানে দোকানে পণ্য সরবরাহ করেছে। বিষয়টি জানার পর তাকে বাসায় চলে যেতে বলা হয়েছে। তার কারণে আমাদের পরিবার-পরিজনসহ কর্মচারীরা ঝুঁকি ও আতঙ্কে রয়েছে।

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমান বলেন, করোনা শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের বাসা-বাড়ি চিহিৃত করলে তারা সামাজিকভাবে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। তাই আর কোনো করোনা শনাক্ত রোগীর বাড়ী চিহিৃত করা হচ্ছে না। তবে যে সকল করোনা রোগী বাহিরে চলাফেরা করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, করোনা রোগী বাজারে পণ্য সরবরাহ করছে জানতে পেয়ে সেই প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে যোগাযোগ করে তাকে বাড়ী থাকতে বলা হয়েছে।

 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন