গোপনে হোয়াটসঅ্যাপে ছবি দেখিয়ে ওপার বাংলায় বিক্রি হচ্ছে পদ্মার ইলিশ!


২০১২ সাল থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। তাই পদ্মার ইলিশ এখন ওপার বাংলায় ডুমুরের ফুল। ভারতের মৎস্যজীবীদের অনেকেরই দাবি বছরের এই সময়টাতেই ইলিশ ধরার জন্য মুখিয়ে থাকেন তাঁরা। কবে বাজারে একটু সস্তায় ইলিশ পাওয়া যাবে তা নিয়েও দিন গোনেন ভোজনরসিক পশ্চিম বাংলার বাঙালিরা। তবে আশার খবর হলো ওপার বাংলার বাজারে ২৫০০ রুপিতে মিলছে বাংলাদেশের রুপালি ইলিশ।
জানা গেছে, এবার ওপার বাংলার বাজারে এপার বাংলার ইলিশের আকালের জেরে পাচারকারীদের কাছে পাচারের অন্যতম উপাদান হয়ে উঠেছে পদ্মার ইলিশ। ভারতীয় পত্র-পত্রিকার খবর, পেট্রাপোল সীমান্তলাগোয়া তেরঘরিয়া, পীরোজপুর, গাইঘাটার সুটিয়া এলাকা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে পদ্মার ইলিশ ঢুকছে বনগাঁ বাজারে। হাত বদলে সেই ইলিশের দাম দাঁড়াচ্ছে ১৮০০-২৫০০ রুপিতে। তবে চোরাপথে আসা ইলিশ খোলাবাজারে সাধারণত বিক্রি করার ঝুঁকি নিতে চান না ব্যবসায়ীরা।
মূলত পাচারকারীদের সঙ্গে বিশেষভাবে যোগাযোগের মাধ্যমে এই বাংলাদেশের ইলিশ মিলছে। এমনটাই দাবি ভারত সীমান্ত বাসিন্দাদের একাংশের।
বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে যাওয়া ইলিশ গোপনে মজুদ করে দালালরা। এরপর মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ইলিশের ছবি দেখিয়ে ওজন ও দাম ঠিক করে যোগাযোগ করা হলে সেই ইলিশ হাতবদল হয়। এমনকি বেশি টাকার বিনিময়ে এই ইলিশের হোম ডেলিভারিও হচ্ছে বনগাঁ সীমান্ত শহর এলাকায়। তবে সবটাই হয় গোপনে। কাকপক্ষীও টের পায় না।
সূত্রের খবর, মূলত কাঁটাতারবিহীন এলাকা দিয়েই প্যাকেটভর্তি ইলিশ যায় বাংলাদেশ থেকে। সেই ইলিশই মজুদ করে দালালরা। এক দেড় কেজি ইলিশের দাম পড়ে প্রায় ১৮০০ রুপি থেকে ২৫০০ রুপি। তবে পাচার রুখতে যথেষ্ট তৎপর সীমান্তরক্ষী বাহিনী। তবুও চোরাপথে, ঘুরপথে চলে যায় বাংলাদেশের ইলিশ। অভিযোগ এমনটাই।
বনগাঁর এক পুলিশ কর্মকর্তার কথায়, দএই সব মাছের গায়েতো লেখা থাকে না পদ্মার ইলিশ বা কোনো স্ট্যাম্প দেওয়াও থাকে না একমাত্র খেয়ে দেখলেই বোঝা যায় কোনটা পদ্মার আর কোনটা দীঘার ইলিশ। তবে এটা ঠিক স্বাদে গন্ধে অপূর্ব বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশ।'
এই বর্ষার মৌসুমে পেট্রাপোল সীমান্তে কাঁটাতারের পাশে দাঁড়িয়ে থাকলে এপার বাংলার পদ্মার ইলিশের গন্ধ ভেসে যায় ওপার বাংলায়, তাই বেশি দাম দিতে হলেও শুধু হোয়াটসঅ্যাপ কেন যেকোনো অ্যাপের মাধ্যমে ভোজনরসিক বাঙালি পদ্মার ইলিশ কিনবে চড়া দামে, এক গাল হেসে বেনাপোলের বিপরীতে পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ওয়েলফেযার অ্যাসোসিয়শনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান।
ভারত সীমান্তে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ব্যাবসায়ী প্রদীপ দে বলেন, 'বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বছর হাড়িভাঙা আম পাঠালেন এ দেশের প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর জন্য। আমরা আশা রাখছি এবার সাধারণ মানুষের জন্যও পদ্মার ইলিশ পাঠাবেন।'
ভরতের বনগাঁ শহরের এক হোটেল ব্যাবসায়ী বলেন, 'কাস্টমারদের অনুরোধ আসে পদ্মার ইলিশের জন্য। তখনই দালালদের হোয়াটসঅ্যাপের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে ওপার বাংলার ইলিশের জন্য।'
এইচকেআর
