মেহেন্দিগঞ্জে চাঁদা না দিলে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও ভালো নেই মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ব্যবসায়ীরা। ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চাঁদা দিতে হতো। তাদের পতনের পর এখন চাঁদা তুলছে বিএনপির একটি অংশ। চাঁদা না দিলে হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাট করা হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী এক বিএনপি নেতা ও তার পরিবারের সদস্যদের কুপিয়ে-পিটিয়ে আহত করেছে অভিযুক্তরা। হামলায় অংশ নেওয়া সবাই জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসানের লোক বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবের হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ তুলে ধরেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মফিজ সরদার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৩ নভেম্বর বিকেল ৩টার দিকে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহ্বাহক মোহাম্মদ তুহিন মীর, লিটন মীর, মামুন ফরাজী, উত্তর জেলা যুবদল নেতা পিপলু জমাদার, আকবর আলী, তাজ, মাহমুদুল হাসান, রাজিব, রাসেল, মেহেদী, জুবায়েরসহ ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী অস্ত্র নিয়ে বালু ব্যবসায়ীদের দোকানে গিয়ে ২ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে।
চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে বালু ব্যবসায়ী মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাদের খান ও তার ছেলে সোহানকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। এ সময় আব্দুল কাদেরের মেয়ে ইতি আক্তার বাবাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করে সাথে থাকা একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
একপর্যায়ে কাদের খানকে তুলে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং কোয়াটারে নিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। চাঁদা না দিলে বালু ব্যবসায়ীদের হত্যা এবং তাদের ঘর-বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। এসময় কাদের খানের ডাক চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এলে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে গুরুতর আহত কাদের খানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মফিজ সরদার অভিযোগ করেন, চাঁদাবাজ এবং সন্ত্রাসীরা সবাই এলাকায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানের লোক হিসেবে পরিচিত। তার ছত্রছায়ায় গত ৫ আগস্টের পর গোটা উপজেলাজুড়ে চাঁদাবাজি, লুটপাট এবং দখলদারিত্ব করেছে। এমনকি তাদের এই সন্ত্রাসী এবং লুটতারাজের থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ত্যাগি নেতাকর্মীরাও রেহাই পাচ্ছে না।
কিন্তু সন্ত্রাসীরা রাজীব আহসানের লোক হিসেবে পরিচয় দেওয়ায় ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। ফলে হামলার শিকার হয়েও চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি করেন আব্দুল কাদের খানসহ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বালু ব্যবসায়ীরা। তবে হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরর প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন কৃষকদল নেতা মফিজ সরদার। তাই এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
তবে সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসানের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে কল করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এইচকেআর