কাউখালীর পশ্চিম পাড়ের গ্রামগুলো চলে যাচ্ছে নদী গর্ভে


পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গনে পাল্টে যাচ্ছে উপজেলার পশ্চিম পাড়ের মানচিত্র। দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমাঞ্চলের সোনাকুর, হোগলা, বেতকা, সয়না, রঘুনাথপুর, রোঙ্গাকাঠী ও গন্ধর্ব এলাকার বিস্তীর্ন জনপথ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সোনাকুরের পাল বাড়ি ও ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প নদী গর্ভে বিলিন হতে চলেছে। সহায়-সম্বল হারিয়ে শত শত পরিবার আজ পথে বসেছে। চাষাবাদের ভূমি দূরের কথা, নেই মাথা গোঁজার মতো আবাসনের ব্যবস্থাও। ভিক্ষা করে দিন কাটাচ্ছে অসংখ্য পরিবার।
কোন প্রকার সহায়তা না পেয়ে নদীভাঙ্গা মানুষগুলো আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন আবাসনে, প্রতিবেশীর আঙিনায় বা কোন আত্মীয়ের বাড়ীতে। ৩০-৩২ বছর ধরে নদীভাঙ্গনে মানচিত্র পরিবর্তন হলেও ভাঙ্গন রোধে নেই কোন পদক্ষেপ।
সন্ধ্যা নদীর পশ্চিম তীরে সোনাকুর এলাকায় দাড়িয়ে তাকালে যতদূর চোখ যায় এক সময় তা ছিল উপজেলার সোনাকুর গ্রামের ভূখন্ড যা এখন শুধুই স্মৃতি। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ইন্দ্রজিৎ কুন্ডু, শংকর পাল, বিনয় পাল, কালু শেখ, হেমায়েত আকন, মনির চৌকিদার বলেন, এক সময় তাদের সব কিছু ছিল আজ তারা অসহায়। তারা বেচেঁ আছে মানুষের দয়ায়। সন্ধ্যার পাড়ের ইন্দজিৎ্র ক্ন্ডুু তার জমির উপর গাছের পাশে দাড়িয়ে বলেন, “সামনে দুই বিঘা জমি ছিল, তা রাক্ষুসে নদীতে লইয়া গেছে। প্রমত্তা সন্ধ্যা কেড়ে নিয়েছে এক ইউনিয়নের সোনাকুর গ্রামের এক তৃতীয়াংশ ঘর বাড়ি, দোকানঘর সহ ফসলী ভূমি। বর্তমানে ভাঙনে ঝুকির মধ্যে রয়েছে অতুল পাল, জয়দেব পাল, শ্যামল পাল, অমল পাল, সঞ্চীব পালন সহ অর্ধ শতাধিক পরিবার। ওই এলাকার রাখাল পাল বলেন সন্ধ্যা নদীর ভাঙনের ফলে ঐতিহ্যবাহী মৃত শিল্প এখন বিলীন হওয়ার পথে।
এই এলাকার ভাঙ্গন এতই তীব্র যা নৌচলাচলের জন্য অত্যন্ত ভীতিকর অবস্থা। পারত পক্ষে কেউ এই অংশ থেকে নৌ যান চালায় না। সয়না রঘুনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান এলিজা সাঈদ জানান দীর্ঘদিন যাবৎ অত্র এলাকার প্রায় ৫০ বিঘা জমি, ৫০টি ঘর বাড়ি, ২০টি দোকানপাট নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জরুরী ভিত্তিতে ভাঙন রোধ না করা হলে গ্রামগুলোর মানচিত্র নদী গর্ভে হারিয়ে যাবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মিয়া মনু জানান নদী ভাঙ্গা মানুষ গুলো দূর্বিসহ জীবন যাপন করছে। নদী ভাঙ্গন রোধ কল্পে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সংগে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের চেষ্টা চলছে।
তারিকুল ইসলাম পান্নু/এইচকেআর
