ঢাকা বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

পিয়াসা জানালেন কিভাবে মুনিয়াকে তার হাতে তুলে দেন নুসরাত

পিয়াসা জানালেন কিভাবে মুনিয়াকে তার হাতে তুলে দেন নুসরাত
ছবি: সংগৃহীত
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

দুই দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে মুনিয়া হত্যা ও ধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামি পিয়াসা মাহবুবকে। দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পিবিআইকে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে নির্ভরযোগ্য সূত্র। পিবিআই’র ওই সূত্র বলছে, পিয়াসা মাহবুবের মতে মুনিয়াকে হত্যা করা হয়নি, সে নিজে থেকেই আত্মহত্যা করেছে।

এর আগে মাদক এবং অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে রাজধানীর বারিধারার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় পিয়াসা মাহবুবকে। এরপর থেকে মাদকসহ তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। যার মধ্যে মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান তানিয়ার করা একটি হত্যা ও ধর্ষণ মামলা রয়েছে।

তবে মুনিয়া হত্যা বা ধর্ষণের ঘটনার সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে পিবিআই’র কাছে দাবি করেছে পিয়াসা মাহবুব। তিনি পিবিআইকে জানিয়েছেন, ‘এক সন্ধ্যায় নুসরাত জাহান তাকে টেলিফোন করেন এবং তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান। পিয়াসা মাহবুব তাকে ২ দিন পর দেখা করার সময় দেন। পরবর্তীতে নুসরাত জাহান বারিধারায় পিয়াসা মাহবুবের বাড়িতে দেখা করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে পিয়াসা মাহবুব বলেছেন, ‘আমি যখন তাকে ডাকলাম তখন তিনি (নুসরাত জাহান) একটি সুন্দরী কিশোরী মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আসলো। মেয়েটি তার ছোট বোন বলে পরিচয় করিয়ে দিলেন। নুসরাত আমাকে অনুরোধ করেন যে তার বোন মডেলিং করতে চায়, নাটকে অভিনয় করতে চায়, সিনেমা করতে চায়। এ কাজে আমার কাছে সহযোগিতা চান। আমি চেষ্টা করবো বলে তাকে জানাই।

এরপর তিনদিন পর নুসরাত জাহান আবার টেলিফোনে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এভাবে কয়েকবার দফা যোগাযোগের পর একদিন নুসরাতকে তার ছোট বোন সহ আসতে বলি। তিনি বলেন যে, তার ছোট বোন যেন আধুনিক পোশাক-পরিচ্ছদ পড়ে আসে। কারণ, তার বাসায় একটি ডিজে পার্টি আছে। সেখানে বেশকিছু সিনেমা জগতের এবং বিভিন্ন মহলের লোকজন আসবে। সেখানে যদি কারো মুনিয়াকে পছন্দ হয় তাহলে তার ভাগ্য খুলে যেতে পারে। এভাবেই পিয়াসার ডিজে পার্টির আসরে নিয়মিতভাবে মুনিয়ার যাতায়াত শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে মুনিয়া একাই আসা শুরু করে।

পিয়াসা মাহবুব আরও জানান, দেশে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর মুনিয়া তাকে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছেন যে, তার পক্ষে ঢাকায় থাকা সম্ভব হচ্ছে না, তিনি কুমিল্লা ফিরে যাচ্ছেন। এজন্য কিছু টাকা চান। পিয়াসা মাহবুব তখন তাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন।

কিছুদিন পর মুনিয়া আবার ঢাকা আসেন এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু সে সময় পিয়াসা জানান যে, এখন করোনার সময়, বাড়িতে পার্টি হচ্ছে না। এজন্য তাকে আপাতত প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন হলে তিনি যোগাযোগ করবেন। এরপর থেকে পিয়াসার সঙ্গে মুনিয়া এবং নুসরাতের কোনো যোগাযোগ হয়নি।

জিজ্ঞাসাবাদে পিয়াসা মাহবুব জানিয়েছেন, নুসরাতই মুনিয়াকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতেন। মুনিয়া যেন আয় উপার্জন করতে পারে, সংসার চালাতে পারে সেজন্য চেষ্টা তদবির করতেন নুসরাত। পিয়াসা মাহবুব বলেন, আমার ধারণা মুনিয়ার পয়সায় নুসরাত চলতেন।

তিনি জানিয়েছেন, কিছুদিন ধরেই মুনিয়া আর্থিক সংকটে ছিলেন এবং বোনের সঙ্গে এ নিয়ে প্রায়ই তার ঝগড়াঝাঁটি হতো। পিয়াসা মাহবুব বলেছেন, তার মতে মুনিয়াকে আসলে হত্যা করা হয়নি, সে নিজেই আত্মহত্যা করেছেন। তার তার এই মৃত্যুর ব্যাপারে পিয়াসা মাহবুব কিছুই জানেন না বলে পিবিআই’র কাছে দাবি জানিয়েছে। তাছাড়া গত ছয় মাস ধরে মুনিয়া বা নুসরাতের সঙ্গে এমনকি অন্য আসামিদের সঙ্গেও তার কোন যোগাযোগ নেই বলে দাবি পিয়াসার।


কে আর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন